সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আগামী অক্টোবরে মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশ চালু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা উদ্বোধন করবেন।’
রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডিএমটিসিএল আয়োজিত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এমআরটি লাইন-৬ এর পরিচালন বিষয়ক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কিছু কিছু জায়গা নিয়ে সিটি করপোরেশনের আপত্তি আছে। যেমন হাতিরঝিল। আমরা চিন্তা করছি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তেজগাঁও পর্যন্ত রাখবো। পরবর্তী অংশ আলাপ আলোচনা করে সমাধান করতে পারব। এটাতে চ্যালেঞ্জ আছে। তবে আমি মনে করি না এই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা যাবে না। কারণ সবার আন্তরিকতা আছে।’
মেট্রোরেলের পিলারে পোস্টার লাগানো বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেলের পিলারগুলো শুরুতে যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছিল আমরা ভয় পেয়ে যাচ্ছি। এইটুকু সৌন্দর্য আমাদের থাকবে না। রুচিবোধের এতই কী ঘাটতি বাংলাদেশে। যে দেশ আজকে সারাবিশ্বের বিস্ময়, সেই দেশের এত রুচির দারিদ্র্য কেন। এখানে জরিমানা করে হলেও পোস্টটা লাগানো বন্ধ করতে হবে। এই মেট্রোরেল সারা জাতির সম্পদ। এই জাতির সম্পদ রক্ষা করতে সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। কারণ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিরদিন ক্ষমতায় থাকবেন না।’
প্রটেকশন গাড়িতে হুটার লাগানো বন্ধ করতে হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি মন্ত্রী। আমার প্রটেকশন গাড়িতে কোনো হুটারের আওয়াজ শুনবেন না। আমি এটা বন্ধ করে দিয়েছি। আমি হুটার চালাই না। হাসপাতালে সামনে দিয়ে গাড়িগুলো যেভাবে হর্ন বাজায়, তা বন্ধ করতে হবে। দুই মেয়রের উপস্থিতিতেই কথাগুলো বলছি।’
রাস্তায় গাড়ি থেকে ময়লা ফেলার বিষয়ে বিআরটিএকে আইন করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গাড়ি থেকে সিগারেটের ফিল্টার রাস্তায় ফেলা বা কোনো কিছু খেয়ে রাস্তায় ফেলা বন্ধ করতে হবে। গাড়ি থেকে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা যাবে না এবং যথাযথ সিগারেট খাওয়া যাবে না। ঢাকা শহরে সিগারেট খাওয়া বন্ধ করুন। দুই মেয়র প্লিজ আপনারা আলাদা জায়গা করে দিন।’
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির বাংলাদেশের প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তমোহিদে বলেন, ‘আপনাদের এ সেমিনারে উপস্থিত হতে পেরে আনন্দিত। ঢাকা মেট্রো এমআরটি আমাদের সবচেয়ে সফল প্রকল্পগুলোর একটি। এটি বাংলাদেশ-জাপানের পারস্পরিক বিশ্বাস-বন্ধুত্বের এক অনন্য উদাহরণ। ডিএমটিসিএলের প্রকৌশলীদের প্রত্যেক বছর জাপানে যেতে পারবেন, এছাড়া জাইকা থেকে সব ধরণের কারিগরি সহায়তাও অব্যাহত রাখা হবে। আপনাদের মতো ঢাকা আমারও খুব প্রিয় শহর। ঢাকার মতো এত জনবহুল শহরে এরকম প্রকল্প সম্পন্ন করা আসলেই চ্যালেঞ্জিং। ভবিষ্যতেও বাংলাদেশে জাইকার সব ধরণের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়োমাকি মিনোওরি বলেন, ‘আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এমআরটি লাইন-৬ বাংলাদেশ-জাপানের আরেকটি যৌথ গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম। এটি প্রমাণ করে যোগাযোগ খাতে জাপান-বাংলাদেশ কতটা অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। এটি ঢাকার জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে। জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নে ভবিষ্যতেও সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে এবং উইন-উইন সিচুয়েশনের ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।’
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী, ডিএমটিসিএলের ব্যবস্তাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস প্রমুখ।