নতুন বছরের প্রায় দেড় মাস শেষ হতে চলেছে। এখনও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির অধিকাংশ বিষয়ের বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছায়নি। মাদরাসা সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এখনো কোনো বই পাননি ছাত্রছাত্রীরা। এসব বই কবে পাওয়া যাবে তারও কোন সঠিক তথ্য নেই শিক্ষা অফিসে। বই না থাকায় ঠিকমত শ্রেণি কার্যক্রম হচ্ছে না। ছাত্রছাত্রীরাও পড়ায় আগ্রহ হাড়াচ্ছে। অনেকটা ঢিলেঢালা ভাবে চলছে মাধ্যমিক পর্যায়ের ক্লাস। তবে, পুরনো বই দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছেন বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছে শিক্ষক। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে অবশিষ্ট বইগুলো দ্রুত দেওয়া দরকার বলেও মনে করেন তারা।
শিক্ষা অফিস ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম, অষ্টম এবং নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদেরকে ৪ থেকে ৫টি বিষয়ের বই দেয়া হয়েছে। এসব ক্লাসের অধিকাংশ বই এখনও দেয়া হয়নি। তাছাড়া ৬টি দাখিল মাদরাসার সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা কোনো বই পাননি। সব মিলিয়ে আখাউড়া উপজেলায় বইয়ের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৭৬ হাজার। তবে ৬ষ্ঠ শ্রেণির সব বিষয়ের বই দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সপ্তম শ্রেণির ৭টি বিষয়ের বই এখনও দেওয়া হয়নি। এগুলো হলো, ইংরেজি, গণিত, চারুপাঠ, ইতিহাস, বিজ্ঞান, ইসলাম শিক্ষা এবং হিন্দু ধর্ম শিক্ষা। অষ্টম শ্রেণির ১০টি বিষয়ের বই বিতরণ বাকি রয়েছে। এগুলো হলো বাংলা ব্যাকরণ, বাংলা দ্রুতপঠন, ইংরেজি গ্রামার, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, সাধারণ বিজ্ঞান, শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, চারু ও কারুকলা, ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, কৃষি শিক্ষা ২ হাজার ৫৫০টি, গার্হস্থ্য ও অর্থনীতি।
নবম শ্রেণির ১০টি বিষয়ের বই এখনও পাননি ছাত্রছাত্রীরা। এগুলো হলো ইংরেজি ও মাধ্যমিক গণিত, ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, হিসাব বিজ্ঞান, ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও ব্যবসায় উদ্যোগ, বাংলাদেশ ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা, ভুগোল ও পরিবেশ এবং পৌরনীতি ও নাগরিকতা। এছাড়া মাদরাসায় শাখায় সপ্তম শ্রেণির ১৫টি বিষয়ের বই এখনও এসে পৌঁছায়নি।
অভিভাবক কাজী মাইনুদ্দিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার ছেলে সন্ধ্যায় কিছুক্ষণ পড়েই উঠে যায়। কিছু বললেই বলে বই নেই। দেড় মাস হয়ে গেছে। বাকি বইগুলো দ্রুত দিলে উপকার হবে।
জানতে চাইলে আমোদাবাদ শাহ আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী মো. তারেক বলেন, পর্যায়ক্রমে বই আসছে। আরও আসবে। শিক্ষকরা পুরনো বই দিয়ে করে পাঠদান করাচ্ছেন।
তুলাই শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সাজ্জাত হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বই না থাকলেও শিক্ষকদের পাঠদানে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। শিক্ষকরা ওয়েবসাইট থেকে পিডিএফ ডাউনলোড করে পাঠদান করাচ্ছেন। তবে দ্রুত বইগুলো পেলে ছাত্রছাত্রীদের জন্য উপকার হবে।
উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার কফিল উদ্দিন মাহমুদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অষ্টম এবং নবম শ্রেণিতে আগের বই-ই রয়েছে। এজন্য পুরাতন বই দিয়ে পাঠদান হচ্ছে। শিক্ষকরা ওয়েবসাইট থেকে চ্যাপ্টারভিত্তিক ডাউনলোড করেও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন। ফলে পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে।
আখাউড়ার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শওকত আকবর খান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, পর্যায়ক্রমে বই আসছে। আশা করছি এ মাসে আরও বই আসবে।