নানা অনিয়মের অভিযোগে টাঙ্গাইলে বিবেকানন্দ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দের অপসারণ ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে এ দাবিতে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন শেষে ক্লাবের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কলেজ শাখার প্রভাষক আবু দাউদ বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিংবডির সভাপতি হিসেবে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রওশন আরা খান দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
ওই সভাপতির ছত্রছায়ায় অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিকে একটি রাজনৈতিক কার্যালয়ে পরিণত করেন। এমন কি অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দে গভর্নিংবডির সভাপতি জোয়াহেরুল ইসলামের হাত ধরে টাঙ্গাইল আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদকের পদ পান।
এরপর থেকে আনন্দ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিকে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। রাজনৈতিক পদ পদবি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্ব্যবহার, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অর্থ তছরূপ ও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মচারী, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছেন।
বক্তব্যে তিনি বলেন, অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন, বোনাস, পিএফ, কলেজের সঞ্চয়ী হিসাব, একাদশ শ্রেণিতে ম্যানুয়াল ভর্তি, বিভিন্ন পরীক্ষার ফি, শিক্ষক কল্যাণ তহবিল ও শিক্ষক সংসদ তহবিল ও কলেজের পশ্চিম পাশে দু’তলা দোকান ও শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন খাত থেকে ৬ কোটি ১৫ লাখ ৫৫ হাজার ৪৩৭ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, বর্তমানে অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দে হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি এবং পলাতক অবস্থায়ও তিনি শিক্ষকদের ভয়-ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন। তিনি তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও দুর্নীতিসহ সব অনিয়মের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ না করায় শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীদের ফেসবুক-ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে অসভ্য, কুচক্রী ও কুলাঙ্গার বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাই শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীরা তার অধীনে কোন অবস্থাতেই চাকরি করতে ইচ্ছুক নয় এবং সবাই মিলে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অধ্যক্ষের অনিয়ম দুর্নীতির তীব্র নিন্দা ও পদত্যাগ দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৬ আগস্ট থেকে বিবেকানন্দ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দে প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত। কোনো ধরনের লিখিত ছুটির আবেদন ছাড়াই তিনি অনুপস্থিত আছেন বলে জানান প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষক এবং কর্মচারীরা।