নীলফামারী জলঢাকার শৌলমারী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ওয়াহেদুজ্জামান রুবেলের স্ত্রী মনিরা বেগম। কাগজে কলমে তিনি তার স্বামীর প্রতিষ্ঠানে দুইটি পদে কর্মরত আছেন। তুলছেন দুইটি পদের এমপিওই। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তথ্য গোপন ও জালিয়াতি করে নিজের স্ত্রীকে একই প্রতিষ্ঠানের দুটি পদে এমপিওভুক্ত করেছেন অধ্যক্ষ ওয়াহেদুজ্জামান রুবেল। দৈনিক শিক্ষাডটকমের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
আরো পড়ুন : স্কুলের নিয়োগ পরীক্ষার আগেই লাখ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেন
এসব বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগ করেও অধ্যক্ষের সাড়া না পেলেও তার স্ত্রী মনিরা বেগম দুই পদে এমপিওভুক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে উপজেলার শৌলমারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সিনিয়র সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে মনিরা বেগম এমপিওভুক্ত হন এবং বর্তমানেও বেতনভাতা তুলছেন। ওই শিক্ষিকার স্কুল শাখার ইনডেক্স নম্বর ৫৪৮৪৯৩। তার সোনালী ব্যাংক জলঢাকা শাখার ব্যাংক হিসাব নম্বর ১১০৬০। মনিরা বেগম প্রতিমাসে ওই হিসাব নম্বরে ৩০ হাজার ৭৯৮ টাকা তোলেন। অপরদিকে একই প্রতিষ্ঠান শৌলমারী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলেজ শাখায় ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক পদে যোগদান করেন অধ্যক্ষের স্ত্রী। চলতি বছরের আগস্ট মাসে কলেজ শাখায় প্রভাষক পদে এমপিওভুক্ত হন তিনি। সেখানে কলেজ শাখায় মনিরা বেগমের এমপিও ইনডেক্স নম্বর ৫৬৮৫২৬৬০। তার সোনালী ব্যাংক জলঢাকা শাখার হিসাব নম্বর ৫৩০৬০০২১১০৬০১। সে অনুয়ায়ী প্রতিমাসে ২২ হাজার ৪০০ টাকা বেতন পাবেন তিনি।
স্থানীয়রা ও একাধিক অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কলেজ শাখায় আমাদের এলাকার অন্য একজনকে নিয়োগ দিলে একটি পরিবার প্রতিষ্ঠিত হতো। সেখানে অধ্যক্ষ সাহেব তার নিজের স্ত্রীকে জালিয়াতি করে নিয়োগ দেয়ার কারণ কি? আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে গতকাল মঙ্গলবার শৌলমারী গাল্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে গেলে অধ্যক্ষ ওয়াহেদুজ্জামান রুবেলকে অনুপস্থিত পাওয়া যায়। পরে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে জানতে চাইলে দুটি পদে এমপিওভুক্ত হওয়ার বিষয়টি দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে স্বীকার করেন অধ্যক্ষের স্ত্রী মনিরা বেগম। তিনি বলেন, আমি ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে কলেজ শাখায় যোগদান করেছি। সে সময় আমি বেতন ছাড়াই কাজ করেছি। তখন তো আপনারা কেউ দেখতে আসেননি।
দুই পদে বেতন তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, প্রভাষক পদের বেতন আমার ব্যাংক অ্যকাউন্টে এসেছে কিন্তু আমি সে টাকা তুলিনি, কারণ আমি প্রভাষক পদে থাকছি না।
তথ্য গোপন ও জালিয়াতি করে একই ব্যক্তি দুই পদে এমপিওভুক্ত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক এস এম আব্দুল মতিন লস্কর দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এটি নিয়মবহির্ভূত কাজ, জালিয়াতি করে নিজের স্ত্রীকে দুই পদে এমপিওভুক্ত করায় তদন্ত করে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।