ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ভাইভাতে হিজাব ও নিকাব পরিহিতা শিক্ষার্থীদের হেনস্তা ও নিকাব পরিধান করায় ভাইভা না নেয়ার অভিযোগ মিথ্যাচার বলে দাবি করেছেন ইনস্টিটিউটের ২৭ শিক্ষক। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২৭ শিক্ষকের স্বাক্ষর করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করা হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ওই ২৭ শিক্ষক বলছেন, ইনস্টিটিউটের তৃতীয় বর্ষের (২৫ তম ব্যাচের) মৌখিক পরীক্ষা ৩১ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়। ওই তারিখে একটি বোর্ডে তিনজন সহকর্মী পনেরো জন শিক্ষার্থীর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করেন। ২৬তম ব্যাচ থেকে মৌখিক পরীক্ষায় নম্বর দেয়া হয় (দুই ক্রডিট)। ২৫তম ব্যাচ পর্যন্ত সন্তোষজনক বা সন্তোষজনক নয় হিসেবে ফল দেয়া হতো। বিশ্ববিদ্যালয় ও আইইআরের প্রচলিত নিয়মানুযায়ী শিক্ষার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। পরীক্ষায় যে কোনো শিক্ষার্থীকে শনাক্তকরণ শিক্ষকদের পেশাগত দায়িত্ব ও কর্তব্য।
ভাইভা বোর্ডে ছাত্রীকে মুখ খুলতে বলা প্রসঙ্গে বলা হয়, তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের মাইক্রোটিচিং সিমুলেশন কোর্স সম্পন্ন করতে হয়। মৌখিক পরীক্ষা শেষে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীদের পাঠদান (প্র্যাকটিস টিচিং ইন্টার্নশিপ) করবে। সেই কারণে তাদের পাঠদানের যোগ্যতা ও যোগাযোগ দক্ষতা পর্যবেক্ষণ জরুরি। ফলে তাদের মুখমণ্ডল অনাবৃত করতে বলা হয়। সুতরাং বিষয়টি সম্পূর্ণ একাডেমিক ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের জায়গা থেকে নিয়ম অনুযায়ী করা হয়েছে।
ওই ঘটনা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে দাবি করে বলা হয়, পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হওয়ার একমাস পর বিষয়টি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সবার সঙ্গে শিক্ষার্থীর ওই দিন মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। ছাত্রীর ভাইভা নেয়া হয়নি বলে যা প্রচার করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। কোনো শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করা হয়নি। ওই ছাত্রী সম্পূর্ণ আচ্ছাদিত থাকায় সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষাটি নেয়ার জন্য মুখের কাপড়টি সরাতে বলা হয়েছিলো। বুঝিয়ে বলার পরে সে সেটি করেছিল। ওই ভাইভা বোর্ডে পোশাক বা পর্দা নিয়ে কোনো ধরনের কথা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইআর) মৌখিক পরীক্ষায় শিক্ষকদের সামনে নিকাব না খোলায় ভাইভা দিতে পারেননি এক শিক্ষার্থী। সেসময় অন্য আরেক শিক্ষার্থীকে জোর করে নিকাব খুলে ভাইভা নেয়া হয়। এ ঘটনা গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে প্রকাশ করার পর ভাইভা বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক এম ওয়াহিদুজ্জামান চাঁন সেই দুই নারী শিক্ষার্থীকে উগ্রবাদী দলের সদস্য হিসেবে আখ্যা দেন। এমনকি যারা পর্দা করে তাদের তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়ে বাসায় থেকে পড়াশোনা করার কথা বলেন। পরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।