দৈনিক শিক্ষাডটকম, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) : নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় মনকান্দা এম.ইউ. আলিম মাদরাসা এন্ড বি.এম কলেজ অধ্যক্ষের সাথে এলাকাবাসীর দ্বন্দ্বের জেরে জানুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে টানা ১৩ দিন উধাও ছিলেন অধ্যক্ষ ও তাঁর অনুসারী শিক্ষকরা। অনুপস্থিত শিক্ষকরা জানুয়ারি মাসের বেতন-ভাতা উত্তোলন করেছেন। কিন্তু অধ্যক্ষের ডাকে সাড়া না দিয়ে প্রতিদিন মাদরাসা উপস্থিত থাকা ৩ শিক্ষকের জানুয়ারি মাসের বেতন-ভাতা বন্ধ রাখা হয়েছে। এ নিয়ে মাদরাসার ৬ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা বন্ধ করলেন অধ্যক্ষ।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে গত রোববার বিকেলে পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন বঞ্চিত শিক্ষকগণ ও এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, তিনজন শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা বন্ধ রাখা, জমি বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ এবং গোপনীয়ভাবে পকেট কমিটির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করাসহ আরো কতিপয় অভিযোগকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর সাথে অধ্যক্ষের এক উদ্ধত্যপূর্ণ ঘটনা ঘটে। বিবেকতাড়িত হয়ে আমরা কয়েকজন এই সত্য স্বীকার করার অপরাধে আমাদেরকে কোনো কিছু না জানিয়ে বিধিবহির্ভূতভাবে গত জানুয়ারি মাসের বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন।
অন্যদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাদরাসার অধ্যক্ষ এএমএম মুহিবুল্লাহর স্বেচ্চাচারিতা, দুর্নীতি ও উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক সুবিচার চেয়ে আবেদন করি। পরবর্তীতে দেখা যায় ১৩/১৪ দিন প্রতিষ্ঠনের মূল গেইটে তালা দিয়ে অধ্যক্ষসহ বেশ কিছু সংখ্যক শিক্ষক প্রতিষ্ঠানে যায়নি। আর বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানে আসলেও মূল গেইট তালাবদ্ধ থাকায় প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে পারেননি। যে সকল শিক্ষক বন্ধ রাখা অবস্থায় নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে এসেছেন তাদেরকে বাদ দিয়ে অন্য সকল শিক্ষক ও কর্মচারীদের পূর্ণ মাসের (পরিকল্পিত বন্ধের দিনসহ) বেতন-ভাতাদি উত্তোলন করেছেন। যা অধ্যক্ষের স্বেচ্চাচারিতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এ ব্যাপারে জানতে অধ্যক্ষ এএমএম মুহিবুল্লাহর মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে মাদরাসা গভর্নিং বডির সভাপতি সঞ্জু রহমান জানান, গ্রামের লোকজনের সাথে শিক্ষকদের একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এসময় কয়েকদিন মাদরাসায় কোনো শিক্ষক আসছে আর আসছে না। শিক্ষকদের তেমন দোষ ছিলো না। তাই বেতন-ভাতা দেয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও এসিল্যান্ড মো. রাজিব হোসেন জানান, বেতন বঞ্চিত শিক্ষকদের ও এলাকাবাসীর পৃথক দু'টি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে সত্যতা পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।