অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলা ভলিবলে দেশসেরা হয়ে চমক দেখাল পাবনার মেয়ে মোর্শেদা খাতুন বীথি (১৪)। নানা প্রতিবন্ধকতা, প্রতিবেশীদের কটু কথা আর সব বাধা পেরিয়ে এখন সে সবার গৌরব আর অহংকার। মাত্র দুই বছরে বাবা-মায়ের ভাঙা ঘরে চাঁদের আলো হয়ে উঠেছে বীথি।
পাবনা পৌর সদরের রাধানগর বাগানপাড়া মহল্লার দম্পতি আজিজুর রহমান ও বুলবুলি খাতুনের একমাত্র সন্তান মোর্শেদা খাতুন বীথি । সে পাবনা আদর্শ গার্লস হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। নৈশপ্রহরীর চাকরি করে কোনোমতে টেনেটুনে সংসার চালান আজিজুর রহমান।
জানা গেছে, গত জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে ঢাকায় বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত অনূর্ধ্ব-১৫ আন্তবিভাগীয় মহিলা ভলিবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় পাবনা জেলা। আর দেশসেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয় বীথি।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বীথির বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুর বেহাল অবস্থা। দীর্ঘদিনের পুরোনো একটি আধা পাকা ভাঙাচোরা টিনের ঘর। সামান্য জমির ওপর তাদের বসতবাড়ি।
বীথির মা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলায় বীথির প্রচণ্ড আগ্রহ। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে যেখানে লেখাপড়া চালানোই দায়, সেখানে খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্ন অনেকটাই দুরাশা ছিল। মেয়ে হয়ে খেলার জন্য প্রতিবেশীরা অনেক কথা শুনিয়েছে। খুবই কষ্ট পেতাম। মেয়েটা মনমরা হয়ে বসে থাকত। কিন্তু আমরা দমে যাইনি। মেয়েকে সাহস দিয়েছি। আজ আমাদের মেয়ে এত বড় সাফল্য অর্জন করেছে, ভাবতেই পারছি না।’
বাবা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই ওকে খুব কষ্ট করে মানুষ করে চলেছি। আশা করি ভবিষ্যতে আমার মেয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।’