অবৈধ নিয়োগে ২৮ বছর শিক্ষকতার অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

অবৈধ নিয়োগে ২৮ বছর শিক্ষকতার অভিযোগ

বরগুনা প্রতিনিধি |

বরগুনা জেলার বামনা উপজেলার হলতা ডৌয়াতলা ওয়াজেদ আলী খান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. সফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্নাতকোত্তর পাস করার আগেই পাস দেখিয়ে অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়ে ২৮ বছর শিক্ষকতা করার অভিযোগ উঠেছে। ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজির প্রভাষক পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন সফিকুল ইসলাম। সেসময়ের এমপিও নীতিমালা অনুসারে প্রভাষক পদে নিয়োগ পেতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী হতে হতো। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, নিয়োগ পাওয়ার কয়েকবছর পর সফিকুল ইসলাম ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে স্নাতকোত্তরের ফল পান।

স্থানীয় ডৌয়াতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান এসব অভিযোগ তুলেছেন। সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চেয়ারম্যান লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। চেয়ারম্যান অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কাছে দাবি জানিয়েছেন।  

লিখিত অভিযোগে চেয়ারম্যান উল্লেখ করেছেন, ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে জারি হওয়া বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো লঙ্ঘন করে ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে অনার্স ফাইনাল বছরের ছাত্র থাকাকালীন তাকে ইংরেজি প্রভাষক পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়। চুক্তিতে উল্লেখ ছিলো, ২০০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করতে পারলে তার নিয়োগ বৈধ হবে। এ ধরণের শর্ত সে সময় বেসরকারি স্কুল ও কলেজের জন্য প্রযোজ্য ছিলো না। তবে ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে স্নাতকের ছাত্র থাকার সময়ই দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ দেখিয়ে তার নিয়োগ বৈধ করা হয়। 

জানা গেছে, ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে জারি হওয়া বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামোতে উল্লেখিত যোগ্যতা অনুসারে প্রভাষক পদে নিয়োগ পেতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে অনার্সসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি বা শুধু স্নাতকোত্তর ডিগ্রিসজ সব পরীক্ষায় দ্বিতীয় শ্রেণি থাকতে হবে বলে উল্লেখ ছিলো।

চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের অভিযোগ, ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে মো. সফিকুল ইসলাম ইংরেজি প্রভাষক পদে নিয়োগ বৈধ করা হলেও তিনি ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে তার স্নাতকোত্তরের ফল প্রকাশ পায়। ফলে দেখা যায়, সফিকুল তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এ ব্যাপারে তৎকালীন বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ দিলে তদন্তে এ জালিয়াতি ধরা পরে বলে অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগের আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে সফিকুল ইসলাম কলেজ থেকে ইস্তেফা দিয়েছিলেন। গভনিং বডির সভায় তার ইস্তফা পত্র অনুমোতিত হয় এবং তাকে এমপিওভুক্ত না করার জন্য তৎকালীন অধ্যক্ষ লিখিতভাবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে জানান। তার এমপিও বন্ধ করে দেন। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে সফিকুল ইসলামকে নতুন গভনিং বডি পূনঃনিয়োগ দেয়, যা অবৈধ বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। সফিকুল ইসলামের জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধ নিয়োগ নেয়ার বিষয়টি তদন্তের দাবি করা হয়েছে অভিযোগে।

জানতে চাইলে অভিযোগকারী চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সফিকুল ইসলামের আপন মামা গভর্নিং বডির সভাপতি হাওয়ায় তাকে অবৈধভাবে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিয়ে বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ সফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান আমাকে হয়রানি করার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে আমি এই ষড়যন্ত্রকারীদের চাপের মুখে এলাকা ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম।

জানতে চাইলে বরগুনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অভিযোগের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।

অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ - dainik shiksha জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর - dainik shiksha বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা - dainik shiksha হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল - dainik shiksha পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034089088439941