সংবিধান, আইন ও সংসদ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সাংবাদিক প্রয়াত মিজানুর রহমান খান বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অনেক দুর্লভ নথি প্রকাশ করেছিলেন। তার লেখা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর অন্যতম হলো- মার্কিন দলিলে মুজিব হত্যাকাণ্ড ও ১৯৭১: আমেরিকার গোপন দলিল। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে পত্রপত্রিকাতেও অনেক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন আছে তার। এই লেখা তেমনই একটি কালোত্তীর্ণ প্রতিবেদন। এতে দেখা যাচ্ছে, পনেরোই আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যকাণ্ডের আগে ওই বছরেরই মার্চে বেশ কিছু পূর্ব লক্ষণ ছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ১৪৪ দিন আগে মিশরের আসওয়ানে মধ্যপ্রাচ্য সমস্যা নিয়ে সাদত-কিসিঞ্জারের বৈঠকে মুজিব সরকার উৎখাত-সংক্রান্ত নথি পাঠানো হয়েছিলো বলে ধারণা করছেন লেখক। ওয়াশিংটন, ঢাকা ও দিল্লির মার্কিন দূতাবাসের মধ্যে চালাচালি হওয়া বেশ কিছু নথিও বিশ্লেষণ করেছেন তিনি। সময়ের উপযোগিতা বিবেচনায় অনুসন্ধানী পাঠকদের জন্য লেখাটি পুন:প্রকাশ করা হলো।
নীল নদবিধৌত মিসরীয় পর্যটন শহর আসওয়ান। হেনরি কিসিঞ্জারের মধ্যপ্রাচ্য ‘দৌড়ঝাঁপ কূটনীতি’র অন্যতম লীলাভূমি আনোয়ার সাদতের মিসর। পঁচাত্তরের ২০ মার্চ। এই কূটনীতির কারণেই কিসিঞ্জার এদিন আসওয়ানে উপস্থিত ছিলেন। মরুঝড় নৈমিত্তিক, একদিন কিসিঞ্জার দলের গাড়িবহরও তাতে এমনভাবেই পড়েছিল যে তা থেকে উদ্ধারে মিসরীয় হেলিকপ্টার তলবের চিন্তা করতে হয়েছিল। আর ঢাকার বাতাস তখন মার্কিন নথি অনুযায়ী মুজিব উৎখাতের ‘গুজবে’ ভারী হয়ে উঠেছে।
১৯৭৪ সালের নভেম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আসওয়ান সফর করেছিলেন। কিসিঞ্জারও তখন মিসরে। তাঁদের মধ্যে তখন অবশ্য সাক্ষাৎ ঘটেনি। কিন্তু এটা একটা কৌতূহলোদ্দীপক কাকতালীয় ঘটনা যে মিসরীয় নেতা সাদতের শুভেচ্ছা হিসেবে দেওয়া ট্যাংক ব্যবহার করে মেজর সৈয়দ ফারুক রহমানের অভ্যুত্থান সংঘটনের ১৪৪ দিন আগে আসওয়ানে মধ্যপ্রাচ্য সমস্যা নিয়ে সাদত-কিসিঞ্জারের নির্ধারিত বৈঠককালে সেখানে একটি বার্তা পৌঁছায় বলে প্রতীয়মান হয়। ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্র দপ্তরে প্রস্তুত করা ওই ‘সিক্রেট’ নথির শিরোনাম: ‘বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের গুজব’। মার্কিন মহাফেজখানার ভাষ্য হচ্ছে, মাইক্রোফিল্মে থাকা এই নথির মূল পাঠ্য ‘উদ্ধার করা সম্ভব নয়’। এর পরের চার দিনে ওয়াশিংটন, ঢাকা ও দিল্লির মার্কিন দূতাবাসে মুজিবের ‘সরকার উৎখাত’ বিষয়ে আরও চারটি পৃথক নথি তৈরি এবং তাদের মধ্যে তা চালাচালি হয়। এই পাঁচটি নথিরই শিরোনাম এবং তার বিষয়বস্তু-সংক্রান্ত নির্দিষ্ট ধারণা পাওয়া গেছে। কিন্তু এগুলোর মূল পাঠ্য এখনো জানা সম্ভব হয়নি। তবে সন্দেহাতীতভাবে এসব নথিতে মুজিব সরকার উৎখাত-সংক্রান্ত আলোচনা ছিল।
এর মধ্যে ২২ মার্চ ঘটে লক্ষণীয় ঘটনা। এদিন একই বিষয়ে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে ‘অভ্যুত্থানের গুজব’ বিষয়ে একটি বার্তা যায় ওয়াশিংটনে। আর ওয়াশিংটনে হেনরি কিসিঞ্জারের তদারকিতে তৈরি হয় আরেকটি দলিল। এর শিরোনাম ‘সিআইএ অ্যান্ড এ পসিবল ক্যু ইন বাংলাদেশ’। অর্থাৎ সিআইএ এবং বাংলাদেশে একটি সম্ভাব্য অভ্যুত্থান। উল্লেখ্য, এটি বাদে ২০ থেকে ২৪ মার্চের মধ্যে প্রস্তুত হওয়া আমাদের অনুসন্ধানে প্রাপ্ত অন্য চারটি বার্তার শিরোনাম ছিল অভিন্ন: ‘ক্যু রিউমারস’। ওই পাঁচটি তারবার্তার মধ্যে ২৪ মার্চে ভারতের মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো তারবার্তাটিকে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ বলে প্রতীয়মান হয়। এই বার্তার ট্যাগসে ‘ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী (নেহরু) গান্ধী। [গান্ধী, ইন্দিরা]’ কথাটি মুদ্রিত আছে। ট্যাগস কথাটির অর্থ হলো বার্তা আদানপ্রদান-সংক্রান্ত ‘ট্রাফিক অ্যানালাইসিস বাই জিওগ্রাফি অ্যান্ড সাবজেক্ট।’
একই দিনে ১৯৭৫ সালের ২০ মার্চ ওয়াশিংটন থেকে যখন ঢাকা, আসওয়ান ও দিল্লিতে মুজিব ‘সরকার উৎখাতের’ ‘সিক্রেট’ বার্তা পাঠানো হয়, ঠিক সেদিনটিতেই আরও একটি চমকপ্রদ কাকতালীয় ঘটনা ঘটে। সৈয়দ ফারুক রহমান, যিনি চুয়াত্তরে কিসিঞ্জারের ঢাকা সফর সামনে রেখে ‘মুজিব সরকার উৎখাতে মার্কিন সহায়তা চেয়েছিলেন, তিনি সেনাবাহিনীর তৎকালীন উপপ্রধান জিয়াউর রহমানের সঙ্গে ২০ মার্চেই দেখা করেন।’ অ্যান্থনি ম্যাসকারেনহান্স লিখেছেন, অনেক চেষ্টা চরিত্র চালিয়ে ফারুক ১৯৭৫ সালের ২০ মার্চ জেনারেল জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সক্ষম হন। দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা।
উল্লেখ্য, ফারুক যখন জেনারেল জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান, তখন মঈনুল হোসেন চৌধুরী বীর বিক্রম সেখানে তাঁকে দেখেছিলেন। মেজর জেনারেল (অব.) মঈনুল হোসেন চৌধুরী পঁচাত্তরের শেষে লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনে নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও পরে রাষ্ট্রদূত হন। ২০০০ সালে এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য স্বাধীনতার প্রথম দশক বইয়ে ওই সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করেছেন। ওই সাক্ষাৎ যে অস্বাভাবিক ছিল তা জেনারেল মইন তাঁর বইয়ে লিখেছেন। তাঁর বর্ণনায়, ‘পরদিন আমি অফিসে জেনারেল জিয়ার কাছে বিষয়টি তুলি। তিনি আমাকে বললেন, হ্যাঁ ফারুক এসেছিল। তিনি এভাবে জুনিয়র অফিসারদের তাঁর বাড়িতে আসা নিরুৎসাহিত করতে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারীদের বলে দিয়েছেন।’ ম্যাসকারেনহান্স লিখেছেন, ‘জেনারেল জিয়া যদিও চক্রান্তকারীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হননি। কিন্তু এটাও ঠিক যে তিনি ফারুককে গ্রেপ্তারও করেননি। উপরন্তু নিজেকে নিরাপদ রাখতে যখন তিনি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, তখন তিনি চক্রান্তের দিকে চোখ বন্ধ করে রাখেন। ফারুকের বক্তব্য অনুযায়ী জিয়া তাঁর এডিসিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ফারুক যাতে আর কখনো তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে না পারেন।’
নথিতে যা আছে: প্রত্যেকটি দলিলের অভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও বিষয়বস্তু হচ্ছে এগুলো ‘সিক্রেট’ এবং প্রত্যেকটিতে মুজিবের ‘সরকার উৎখাত’ কথাটি রয়েছে। ২০ মার্চের নথিটির প্রেরক: ‘এনইএ এনএসসি’। প্রেরক মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। প্রাপক: ‘DACCA ASWAN NEWDELHI’। এই নথিটির ট্যাগসে পিআইএনআর (পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স ইন্টেলিজেন্স), পিআইএনটি (ইন্টারনাল পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স, বিজি (বাংলাদেশ), পিকে (পাকিস্তান), ইন (ভারত) ইউএস (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) ও সিআইএ কথাটি আছে। এতে অনুমিত হয় যে উল্লেখিত দেশ ও সংস্থার কাছে ওই নথিটি পাঠানো হয়েছে বা নথিতে তাদের আগ্রহ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা থাকতে পারে। মাইক্রোফিল্ম হিসেবে থাকা ওই দলিলটি ভবিষ্যতেও পাঠোদ্ধার করার আর ‘সম্ভাবনা নেই’ মর্মে উল্লেখ আছে। তবে নথিটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে বলা আছে: ‘বৈদেশিক সম্পর্ক’, ‘সরকার উৎখাত’, ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা’। এর সঙ্গে দুটি সাংকেতিক শব্দও আছে। ‘ক্যাট-সি, টিওএসইসি ৮২৭। মার্কিন আইন অনুযায়ী এই নথিটি রিভিউ ও হস্তান্তরের তারিখ যথাক্রমে ৪ আগস্ট ২০০৩ ও ২৮ মে ২০০৪।
অন্য চারটিতে কী আছে: ১৯৭৫ সালের ২১ মার্চের সিক্রেট তারবার্তাটির শিরোনাম: অভ্যুত্থানের গুজব। প্রেরক: দিল্লির মার্কিন দূতাবাস। প্রাপক: ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। এটির প্রস্তুত সময়: ২১ মার্চ ১৯৭৫। শুক্রবার। এই বার্তারও মূল বিষয়বস্তু ‘পাওয়া যায় না’ বলেই উল্লেখ আছে। দলিলে বর্ণিত বিষয়বস্তুর ধারণা: ‘ক্যাট-সি, বৈদেশিক সম্পর্ক, সরকার উৎখাত, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা’। এর ট্যাগে ‘রহমান, মুজিবুর’ শব্দটি আছে। তারবার্তাটি কোথাও বিতরণ না করতে নির্দেশনা আছে।
২২ মার্চের সিক্রেট তারবার্তার প্রেরক: ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। প্রাপক: পররাষ্ট্র দপ্তর। এতে বিষয়বস্তুর ধারণা আগেরটির মতোই। কেবল এটিতে একটি বাড়তি নতুন কথা যুক্ত করা হয়েছে—‘রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ’। এই বার্তারও মূল বিষয়বস্তু মাইক্রোফিল্মে সংরক্ষিত ছিল এবং তা-ও ‘পাওয়া যায় না’ বলে উল্লেখ আছে। এটির রিভিউ ও হস্তান্তরের তারিখ যথাক্রমে ৪ আগস্ট ২০০৩ এবং ২৮ মে ২০০৪। লক্ষণীয় যে এই বার্তাটির ট্যাগে ব্রাকেটে ‘রহমান, মুজিবুর’ কথাটির উল্লেখ দেখা যায়।
লক্ষণীয় যে ২২ মার্চের ‘সিআইএ অ্যান্ড এ পসিবল ক্যু ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামের এনইএ এবং এনএসসি দলিলটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে বলা আছে,‘ ‘সরকার উৎখাত, ইন্টেলিজেন্স কালেকশন, সশস্ত্র বাহিনী, রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এর ট্যাগসে ‘পিকে’ মানে পাকিস্তান নামটিও আছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক আমলাতন্ত্রের তিনটি শাখা সিআইএ, প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র দপ্তর। এনইএ মানে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বাংলাদেশ ডেস্ক। এনএসসি হলো ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল। ১৫ আগস্ট জেরল্ড ফোর্ড ছিলেন এর সভাপতি। কিসিঞ্জার ছিলেন এর প্রভাবশালী নীতিনির্ধারক।
উল্লেখ্য, ২৪ মার্চের সিক্রেট তারবার্তাটিরও মূল মুদ্রিত পাঠ্য ‘পাওয়া যায় না’ উল্লেখ আছে। এই তারবার্তার প্রেরক: দিল্লির মার্কিন দূতাবাস। প্রাপক: ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। তবে এর বিশেষ তাৎপর্য হচ্ছে এই তারবার্তায় রেফারেন্স হিসেবে আসওয়ানে ২০ মার্চে কিসিঞ্জারের পাঠানো তারবার্তাটির উল্লেখ ছাড়াও ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে দিল্লির মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো দুটি ইলেকট্রনিক তারবার্তার উল্লেখ আছে। এ থেকে ইঙ্গিত মেলে যে ওই দুটি তারবার্তায় বাংলাদেশের অভ্যুত্থানবিষয়ক কোনো তথ্য ছিল। তবে এই দুটির হদিস মেলেনি।
এটাও বিস্ময়কর যে এই দলিলটির সঙ্গে পৃথক আরেকটি অবিকল দলিল পাওয়া গেছে। একটির সঙ্গে অন্যটির তফাত হলো তারিখে। একটিতে আছে ২৪ মার্চ ১৯৭৫। অন্যটিতে রয়েছে ২৪ এপ্রিল ১৯৭৫।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও কিসিঞ্জারের প্রশ্নের জবাবে আলফ্রেড আথারটন, যিনি ১৫ আগস্টের পরে ঢাকায় রাষ্ট্রদূত ডেভিস ইউজিন বোস্টারের অভ্যুত্থান বিষয়ে খবরাখবর প্রেরণে অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে অভ্যুত্থানে ‘মার্চে বেশ কিছু পূর্ব লক্ষণ ছিল।’
যদিও এই দলিলটি চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে নির্দেশ করে না। এটা সিআইএকে দায়মুক্তি বা অভিযুক্ত করে কি না, তার চেয়েও বড় কথা এটা নতুন করে প্রশ্ন তৈরি করে। ঢাকা ও দিল্লির দূতাবাসে প্রস্তুত চারটি দলিলের অভিন্ন শিরোনাম ‘অভ্যুত্থানের গুজব’। কিন্তু ওয়াশিংটনে প্রস্তুত নথির শিরোনামে ‘গুজব’ শব্দটি নেই।
এসব অন্তত এটুকু নিশ্চিত করেছে যে ১৯৭৫ সালের মার্চে বাংলাদেশের সম্ভাব্য অভ্যুত্থান সংঘটনের গুজব নিছক উড়ো কথা ছিল না। এবং তার চেয়েও বড় ইঙ্গিতবহ যে হেনরি কিসিঞ্জার ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশে মুজিব সরকারের উৎখাতের ‘গুজব’কে বেশ গুরুত্ব দিতেন। আসওয়ান সফররত হেনরি কিসিঞ্জারের কাছে ‘সিক্রেট’ গুজব পৌঁছে দেওয়াকে কেবলই রুটিন হিসেবে গণ্য করা কঠিন। এর সপক্ষে যুক্তি হলো, ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে পঁচাত্তরের জানুয়ারিতে তৎকালীন ডেপুটি চিফ অব মিশনের পাঠানো একটি তারবার্তা।
অনুকূল সময়: ১৯৭৫ সালের ২২ জানুয়ারি। সকাল ১০টা ২০। আরভিং চেসল ঢাকা থেকে পাঠানো অভ্যুত্থানের গুজব শীর্ষক তারবার্তায় লিখেছিলেন, ‘সামরিক অভ্যুত্থান-সংক্রান্ত কিছু গুজব ইঙ্গিত দিচ্ছে যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মার্চ হলো সবচেয়ে অনুকূল সময়। দেশের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে বাংলাদেশ সরকারের সামনে কোনো আশা নেই এবং কর্তৃত্ববাদের একটি বড় ডোজ গলাধঃকরণই এখন বঙ্গবন্ধুর জন্য অত্যন্ত লোভনীয় বিষয়।’ ১৯৭৫ সালের ৪ মার্চ আরভিং চেসল বাকশালের নির্বাহী কমিটির বিষয়ে জানতে মুজিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।
পঁচাত্তরের মার্চ মাসটাই কেন ও কীভাবে সবচেয়ে অনুকূল মনে হলো, তার উত্তর আমরা ওই তারবার্তায় পাই না। তবে এটা কাকতালীয় হলেও বিস্ময়কর যে হেনরি কিসিঞ্জার-নিয়ন্ত্রিত ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল নির্দিষ্টভাবে সিআইএকে সম্পৃক্ত করে মার্চেই একটি দলিল তৈরি করল। আর তার শিরোনাম হলো কি না, ‘সিআইএ এবং বাংলাদেশে একটি সম্ভাব্য অভ্যুত্থান’। (লেখাটি এ বিষয়ে প্রকাশিতব্য দ্বিতীয় বই থেকে নেওয়া)।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।