নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে চলতি বছরই মাধ্যমিকের সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনবে সরকার। ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে মাধ্যমিক পর্যায়ে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হচ্ছে। এর আগেই শতভাগ শিক্ষককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনার পরিকল্পনা আছে বলে দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি দৈনিক আমাদের বার্তার এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ডিজি বলেন, এ বছর ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে। আগামী বছর অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। তবে এর আগেই অর্থাৎ চলতি বছরই মাধ্যমিকের শতভাগ শিক্ষককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। ইতোমধ্যে আমাদের শিক্ষকদের একটি বড় অংশ প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। অল্প কিছু শিক্ষক বাকি আছেন। যারা বাকি আছেন তাদের আগামী দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। এমনই পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
অষ্টম-নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন নিয়ে জানতে চাইলে মহাপরিচালক আরো বলেন, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের সময় আমরা বলেছিলাম প্রশিক্ষণ না পাওয়া শিক্ষকদের দিয়ে ক্লাস নেয়ানো যাবে না। তবে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে অষ্টম ও নবমে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের আগেই সব শিক্ষক প্রশিক্ষণ পাবেন। আর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে এমন কিছু বিষয় আছে যেগুলো ওই শিক্ষকই পরবর্তী ক্লাসগুলোতে পড়ান। তারাতো ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। আর যেসব বিষয়ের শিক্ষকরা এখনো প্রশিক্ষণ পাননি তাদের দ্রুত প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে।
তিনি আরো বলেন, শুধু প্রশিক্ষণ দিয়েই শেষ নয়, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান নিয়মিত চর্চায় রাখার ব্যবস্থা করা হবে। এজন্য প্রতিষ্ঠানে ইনহাউজ প্রশিক্ষণ-কর্মশালা ইত্যাদির আয়োজন করা হবে। সফলভাবে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে সরকার তথা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর বদ্ধ পরিকর।
জানা গেছে, নতুন কারিকুলামে নবম ও দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও মানবিক বিভাগের বিভাজন থাকছে না। নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখায় নবম দশম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন তুলে নেয়া হচ্ছে। আগামী বছর থেকে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হচ্ছে। আর ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে দশম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হবে। ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দে নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন শিক্ষার্থীরা।
নতুন কারিকুলামে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দশটি কমন বিষয় পড়ানো হবে। বিষয়গুলো হলো-বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি। নতুন শিক্ষাক্রমে অষ্টম শ্রেণিতে এসব বিষয়ে পড়েই শিক্ষার্থীরা নবম শ্রেণি উত্তীর্ণ হবেন। পরে দশম শ্রেণিতেও এসব বিষয়ে পড়ে বছরের শেষে স্কুল পর্যায়ের প্রথম পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে শিক্ষার্থীদের। এ পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ নম্বর শিখনকালীন মূল্যয়ন ও ৫০ শতাংশ নম্বর সামষ্টিক মূল্যায়ন বা পরীক্ষার মাধ্যমে দেয়া হবে।