নামকরা কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী। দেখতে সুন্দর, স্মার্ট। লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। প্রেসিডেন্ট স্কাউট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। স্কাউটের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তিনি প্রায়ই কথা বলতেন ছামিউল আজম নামের অন্য কলেজের শিক্ষার্থীর সঙ্গে। একপর্যায়ে স্কাউট সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই ছামিউলের সঙ্গে ঝামেলা হয়।
অনেকের মোবাইলে চলে যায় মেধাবী এই শিক্ষার্থীর আপত্তিকর ভিডিও।
তার আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের কাছেও পৌঁছায় ভিডিও। জানাজানির পর লোক-লজ্জায় কলেজ ছাড়তে বাধ্য হন তরুণী।
উপায়ান্তর না পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেন। আদাবর থানায় করা পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম ছামিউল আজম ও তার সহযোগী তাহছিন আহমেদকে গ্রেপ্তার করে। ছামিউল ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী এবং তাহছিন একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে দু’টি ল্যাপটপ, ৩টি মোবাইল ফোন, ৩টি সিম কার্ড ও ১টি পেনড্রাইভ উদ্ধার করা হয়।
ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আশরাফউল্লাহ বলেন, গত বছরের ১২ই জুন তরুণীর স্কাউটের এক বন্ধু ‘এম ছামিউল আজম’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে একটি লিংক পাঠিয়ে জানায়, সাইবার ক্রাইম সলিউশন নামক ফেসবুক গ্রুপে তার বিষয়ে খারাপ কথা লিখে এবং কয়েকটি পর্নো ছবির চেহারা মুছে তার পরিচয় উল্লেখ করে পোস্ট করেছে। একইভাবে জানা যায়, তরুণীর আপত্তিকর ভিডিও পর্নো সাইটে আপলোড করা হয়েছে। এখানেই ছামিউল থামেনি। ভিডিও, ছবি তরুণীর কলেজের বিভিন্ন গ্রুপে পাঠায়। আপত্তিকর এসব ভিডিও বন্ধুবান্ধবসহ অনেকের মোবাইলে চলে যায়। এসব কারণে কলেজে যাওয়া বন্ধ করে ঘরবন্দি জীবন কাটানো শুরু করে ওই তরুণী। পরে স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে তরুণীর বাবা মামলা করেন।
তিনিও বলেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে তরুণীকে সামাজিক ও মানসিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে এসব ভিডিও সংগ্রহ ও ছড়িয়ে দিয়েছে ছামিউল ও তার সহযোগী। তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।