আবাসন সংকটে জবি শিক্ষার্থীরা - দৈনিকশিক্ষা

আবাসন সংকটে জবি শিক্ষার্থীরা

জবি প্রতিনিধি |

সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জগন্নাথ কলেজকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করা হয়। ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার সময় ১১টি আবাসিক হল ছিলো। কিন্তু তার মধ্যে কিছু চলে যায় ক্ষমতাশালীদের দখলে। আর বাকিগুলো হয়ে পড়ে বসবাসের অযোগ্য। এরপর থেকেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবাসন সংকটে ভুগছেন। সেই থেকে পুরান ঢাকার বিভিন্ন মেসে বা ভাড়াবাসায় থেকে তাদের লেখাপড়া চলছে। আবাসন সুবিধার দাবিতে আন্দোলনও হয়েছে।

দখল হয়ে যাওয়া হলগুলো উদ্ধার ও নতুন হল নির্মাণের দাবিতে ২০০৯ এবং ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে ছাত্ররা আন্দোলন ও বিক্ষোভ করেছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি ছাত্রী হল নির্মাণের ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হল বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে আসন বরাদ্দ দেয়া হয়। যেখানে ১ হাজার ২০০ ছাত্রীর আবাসনের ব্যবস্থা হয়েছে। যেটিই বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র আবাসিক হল। এ পরিস্থিতিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিংহভাগ শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আবাসিক সুবিধার দিক থেকে ইউজিসির সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান তলানিতে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র প্রভাত বিশ্বাস দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলেদের জন্য কোনো হল নেই। মেয়েদের জন্য একটি হল আছে যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। যার কারণে আমরা ভাড়া বাড়িতে থাকতে বাধ্য হচ্ছি। পুরান ঢাকায় বাসা ভাড়া তুলনামূলক বেশি কিন্তু বাসাগুলোতে সুযোগ সুবিধা কম। বেশিরভাগ বাসাবাড়িতে আলো-বাতাস পাওয়া যায় না। আমরা একরকম আমরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে বাধ্য হচ্ছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক ছাত্র বলেন, আমাদের ছেলেদের জন্য কোনো হল নেই, তাই এখানে মেসে থাকতে হচ্ছে। প্রতিমাসে সাত থেকে আট হাজার টাকা খরচ হয় আমাদের। এটা সত্যিই আমাদের ও আমাদের পরিবারের জন্য কষ্টকর।

এদিকে, গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মেহেদী হাসান শাওন মারা গেছেন। জানা যায়, গত ১ মে মেসের জন্য বাজার করতে ধুপখোলা বাজারে যান তিনি। রাস্তায় গ্যাসলাইন মেরামত করার সময় ঘটা বিস্ফোরণে তিনি দগ্ধ হন। শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা থাকলে এমন ঘটনা ঘটতো না।

এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে পুরান ঢাকা এলাকায় স্থানীয় কিশোর গ্যাং দ্বারা হামলার শিকার হয়েছেন। গেলো ২৮ মার্চ রাজধানীর গেন্ডারিয়া এলাকায় মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কিশোর গ্যাং সদস্যদের হামলার শিকার হন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হয়েছিলেন।

শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসন থাকলে এসব অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হতে হতো না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নতুন ক্যাম্পাসে যত দ্রুত সম্ভব আবাসন নির্মাণের দাবি তাদের।

প্রসঙ্গত, রাজধানীর কেরানীগঞ্জে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ চলছে। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি আধুনিক ক্যাম্পাস নির্মাণের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নতুন ক্যাম্পাসের জন্য বরাদ্দকৃত জমি বুঝে পেয়েছে। দ্রুত প্রকল্পের প্রথম ধাপের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রশাসন বলছে, প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে সম্পন্ন হবে আবাসিক হল, একাডেমিক ভবনসহ অন্যান্য ভবন নির্মাণের কাজ।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0056869983673096