আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে খালেদা জিয়া গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছিলেন। আমাকেও এই প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো। তখন আমি বলেছিলাম, আমি শেখ মুজিবের মেয়ে। ক্ষমতার লোভ করি না, জনগণের স্বার্থ বিক্রি করি না।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর কাওলা মাঠে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন উপলক্ষে এ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। আগের শনিবার এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে সমাবেশের তারিখ পরিবর্তন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া পাকিস্তানের ধারাবাহিকতা নিয়ে চলতে চেয়েছিলেন। জাতির পিতার হত্যাকারীকে ভোট চুরি করে পার্লামেন্টে বসিয়েছিলেন। আল বদর, রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী, যারা এ দেশে গণহত্যা চালিয়েছে, মা-বোনকে ধরে নিয়ে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে দিয়েছে, তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল। জিয়াও বসিয়েছিলেন, এরশাদও, খালেদা জিয়াও। কাজেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে তাদের কোনো অবদান নেই। তারা সেটা করতেও চায় না। এটাই হচ্ছে সব থেকে দুর্ভাগ্যের বিষয়।
আওয়ামী লীগ অনেক সংগ্রামের পথ বেয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলে একটা দেশের যে উন্নতি হয়, যারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে তারা ক্ষমতায় থাকলে যে দেশের জন্য উন্নতি হয়, আজ আমরা সেটা প্রমাণ করেছি।
তিনি আরো বলেন, উন্নয়ন চাইলে নৌকায় ভোট আর ধ্বংস চাইলে বিএনপি-জামায়াতকে বেছে নেবেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবেই-এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দেবে। জনগণ ভোট দিলে তিনি ক্ষমতায় থাকবেন, না দিলে নেই।
বিএনপি নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নির্বাচন নষ্ট করতে চায়। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চায়। এ জন্য তিনি দেশবাসী এবং ঢাকাবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ভোটে আসবে কি আসবে না—সেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে। তারা যে নির্বাচন করবে, নেতাটা কে? এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেন সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া? খুনের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমান? আসলে তারা জানে নির্বাচনে এলে জিততে পারবে না।
আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কেউ ক্ষমতায় এলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আপনারা কি বিএনপির কথায় নাচতে চান? এ সময় সবাই না, না বলে জবাব দেন। নৌকা দেশের স্বাধীনতা দিয়েছে। নৌকা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছে। নৌকায় ভোট দেওয়ার কারণেই পানির কষ্ট নেই। মানুষ সুখে আছে। এ সময় নৌকায় ভোট দেবেন কি না, উপস্থিত মানুষের ওয়াদা চান। জনসভায় আসা লোকজন ‘হ্যাঁ’ সূচক জবাব দেন। শুধু নিজে দিলে হবে না। পরিবার-পরিজন নিয়ে ভোট দিতে হবে।
বিএনপি বিদেশে ধরনা দিচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এতে কোনো কাজ হবে না। তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) আস্থা এ দেশের জনগণের ওপর। জনগণই তার আপনজন।
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে ইউক্রেন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেন। তবে দেশের ভেতরে সিন্ডিকেটের কথাও বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মজুতকারী ও কালোবাজারিরা কোথায় আছে, তা আপনারা খুঁজে বের করবেন। সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে। কেউ খাবার মজুত করবে আর জনগণ কষ্ট করবে, তা চলবে না।