আর সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান প্রকাশ করবে না নিসচা - দৈনিকশিক্ষা

আর সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান প্রকাশ করবে না নিসচা

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

সারা দেশে সড়ক, রেল ও নৌ দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা নিয়ে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ভিন্ন ভিন্ন পরিসংখ্যান দেওয়ায় এ বছর থেকে দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান প্রকাশ করবে না নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)। আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ‘সড়ক দুর্ঘটনায় বিভ্রান্তিকর পরিসংখ্যান’-শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। 

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘সরকারের অসহযোগিতা রয়েছে। তাদের আগে থেকে তথ্য দিতে হবে। কারও মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। সরকারি সংস্থাগুলোই দুই রকম তথ্য দিচ্ছে। আমরা বারবার বলার পর দেখলাম গত বছর থেকে বিআরটিএ শুরু করেছে। কিন্তু পুলিশের পরিসংখ্যানের সঙ্গে সেটির মিল নেই।’

লিখিত বক্তব্যে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ২০১২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান জাতির সামনে তুলে ধরেছে তাঁর সংগঠন। কিন্তু যখন তাঁদের দেখাদেখি অনেকে সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান উপস্থাপন করছে এবং নানা বিতর্ক তৈরি হচ্ছে—তখন এ বছর এসে তিনি ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের পরিসংখ্যান আর তুলে না ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত সরকারের কাছে একটি দাবি জানিয়ে এসেছি, এটি কোনো বেসরকারি সংগঠন বা কোনো ব্যক্তির পক্ষে প্রকৃত চিত্র তুলে আনা সম্ভব নয়। এর জন্য সরকারের একটি সার্বক্ষণিক মনিটরিং সেল এবং লোকবলের প্রয়োজন রয়েছে। এ ছাড়া প্রযুক্তিগত ডেভেলপমেন্টেরও দরকার রয়েছে, যা কোনো ব্যক্তি উদ্যোগে করা সম্ভব নয়।’ 

তিনি বলেন, ‘পুলিশের রিপোর্ট আমরা গ্রহণযোগ্য বলে মনে করতাম না কারণ এই রিপোর্ট তৈরি করা হয় শুধু মামলার ওপর ভিত্তি করে অর্থাৎ যে দুর্ঘটনার মামলা করা হতো শুধু সেই দুর্ঘটনার তথ্যই ওই রিপোর্টে থাকত। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যেত নানা কারণে অনেক দুর্ঘটনার মামলা হতো না। যেমন আমার স্ত্রী দুর্ঘটনায় নিহতের ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। অনেক সময় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অনেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ৩০ দিনের ভেতরে মারা গেলে সেই তথ্য সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বলে বিবেচিত হবে। আমাদের দেশে সেটা পুলিশ উল্লেখ করে না। এ কারণে কোনো গ্রহণযোগ্যতা আছে বলে আমরা মনে করি না।’ 

ইলিয়াস কাঞ্চন আরও বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত গ্লোবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট অন রোড সেফটি-২০২৩ এ আরও বলা হয়েছে, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা বা রোডক্র্যাশে মৃত্যু হয়েছে ২১ হাজার ৩১৬ জনের। তবে পুলিশের রিপোর্টে বলা হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে মাত্র ২ হাজার ৩৭৬ জনের। একইভাবে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে ২৪ হাজার ৯৪৪ জনের মৃত্যুর কথা বলা হলেও পুলিশের রিপোর্টে বলা হয়েছে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৬৩৫ জনের। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের রিপোর্টে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মৃত্যু হয়েছে ৩১ হাজার ৫৭৮ জনের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রতি লাখে মৃত্যুহার ছিল ১৫.৩ শতাংশ এবং ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে এই মৃত্যুহার ছিল প্রতি লাখে ১৯ জনের মতো। 

‘অথচ সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্য মতে, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে ৫ হাজার ৪৯৫ সড়ক দুর্ঘটনায় সারা দেশে নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ২৪ জন। পুলিশের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই বছর ৫ হাজার ৯৩ দুর্ঘটনায় ৪ হাজার ৪৭৫ জন নিহত হয়েছেন। আরও দুই একটি সংগঠনের তথ্যও এর চেয়ে অনেক বেশি। আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে সেটিও প্রত্যেক রিপোর্টের সঙ্গে মিলছে না। এতে করে দেখা যাচ্ছে—বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সরকার, পুলিশ ও বিভিন্ন রিপোর্টে ভিন্নতা রয়েছে। আমরা মনে করি, এতে করে জাতি বিভ্রান্ত হচ্ছে। কারণ সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের সকল তথ্যকে অগ্রহণযোগ্য বলে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বিষয়টি আমাদের ভাবিয়ে তোলে।’ 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বাংলাদেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া তবে বিআরটিএ সেটা মানে না। যে যার মতো তথ্য দিয়ে, তার পরিসংখ্যান সঠিক বলে দাবি করছে। কেউ হাসপাতালের তথ্য দিচ্ছে না। এভাবে তো হয় না। 

এসব কারণে ইলিয়াস কাঞ্চনের সংগঠন আর সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান জানাবে না বলে জানান তিনি। 

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, তবে তাঁদের সেল চালু থাকবে, সেটি নিজেদের গবেষণার জন্য।

পাঠ্যবইয়ের কাগজের বার্স্টিং ফ্যাক্টর কমানোর ধান্দায় মুদ্রাকররা - dainik shiksha পাঠ্যবইয়ের কাগজের বার্স্টিং ফ্যাক্টর কমানোর ধান্দায় মুদ্রাকররা বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ না পাওয়া শিক্ষকদের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ না পাওয়া শিক্ষকদের তথ্য আহ্বান কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহে ফের ই-রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha শিক্ষক শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহে ফের ই-রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ববি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আল্টিমেটাম - dainik shiksha ববি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আল্টিমেটাম এসব কিন্তু শিক্ষার্থীদের কাজ নয় - dainik shiksha এসব কিন্তু শিক্ষার্থীদের কাজ নয় প্রাথমিকের দুই ফুটবল টুর্নামেন্টের নাম বদলে গেলো - dainik shiksha প্রাথমিকের দুই ফুটবল টুর্নামেন্টের নাম বদলে গেলো please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0068109035491943