ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনা কেন্দ্র করে খোঁজা হয় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ। তবে ঘটনার পর ১০ দিন পার হলেও এখনো তা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে। তাই শেষ পর্যন্ত ওই ফুটেজ পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনাস্থল দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের ১২টি স্থানে রয়েছে সিসি ক্যামেরা। এর মধ্যে ডাইনিংয়ের ক্যামেরার মাধ্যমে গণরুমে যাওয়ার-আসার পথ দেখা যায়। কিন্তু ক্যামেরার সে ফুটেজটি পায়নি তদন্ত কমিটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল বলেন, আমরা হল প্রভোস্টকে বলেছি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সরবরাহের জন্য। তবে তারা এখনো তা পারেনি। তাদের কিছু ডিভাইস প্রয়োজন। তারা চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামসুল ইসলাম বলেন, আমরা আইসিটি সেলকে বলেছিলাম ফুটেজ সংগ্রহে সহযোগিতা করতে। কিন্তু তারা পারেনি। এখন আমরা দ্রুতই বাইরে থেকে টেকনিশিয়ান এনে ফুটেজ উদ্ধারের চেষ্টা করবো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহসানুল হক আম্বিয়া বলেন, আমরা আমাদের দুজন টেকনিশিয়ানের মাধ্যমে ফুটেজ উদ্ধারের চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাদের মাধ্যমে এটা এখন সম্ভব না।
কী ধরনের সমস্যা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বায়োসের ব্যাটারির কিছু সমস্যা। এটা বাইরে থেকে টেকনিশিয়ান নিয়ে এসে এ সংক্রান্ত কাজ করালে ভালো হবে।
এদিকে, তদন্ত কার্যক্রমের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, তদন্ত কার্যক্রম বেশ কিছুটা এগিয়েছে। আশা করি, নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারবো।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাবাসসুমসহ আরও সাত-আটজন জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। ঘটনা তদন্তে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এছাড়া এ ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনলে একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও একজন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এছাড়া অভিযুক্তদের ক্যাম্পাসের বাইরে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরই মাঝে গত শনি ও সোমবার ভুক্তভোগী এবং অভিযুক্তদের তদন্ত সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার আবারও ক্যাম্পাসে আসেন পাঁচ অভিযুক্ত।