দৈনিক শিক্ষাডটকম, ইবি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম সেলিমের বিরুদ্ধে অসৌজন্যমূলক ও অপমানজনক আচরণের লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন।
এ নিয়ে মৌখিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোন সুরাহা না হওয়ায় বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযোগপত্রে সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন জানান, গত ১৪ এপ্রিল দুপুর আনুমানিক ১২টা ১৫ মিনিটে ছেলে সন্তানকে সাথে নিয়ে মোটর বাইকে করে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন তার স্বামী। এ সময় মেইনগেট অতিক্রমকালে উপস্থিত নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম (সেলিম) তাদেরকে আপত্তিকর কথাবার্তা বলে চরমভাবে অপমান করেন। স্বামীর সামনে তাকেও অপমানজনক কথাবার্তা বলেছেন বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।
লিখিত অভিযোগে তিনি আরও বলেন, ঐ ঘটনার সময় মেইন গেটে ক্যাম্পাসে প্রবেশ বা বের হওয়ার জন্য কোনো লোকজন উপস্থিত ছিলেন না। সেখানে আনসার সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয় চাকরি করে এমন কিছু লোকজন উপস্থিত ছিলেন। তবে মো: আব্দুস সালাম যখন এ ধরনের আচরণ করছিলেন তখন কিছু স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে এগিয়ে আসেন। আমার স্বামী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন গ্র্যাজুয়েট এবং জনাব সালামের বেশ পরিচিত। তাই তিনি অত্যন্ত ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে সেখান থেকে চলে যান এবং আমাকে বিষয়টি জানান।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় আমি একজন শিক্ষক হিসাবে চরমভাবে অপমানিত হই। সর্বোপরি ঘটনাস্থলে আমার ছেলে তার বাবার সাথে ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন গ্রাজুয়েটের সন্তান হিসেবে মেইন গেটে এমন হয়রানি ও অপমানজনক আচরণে সে মানসিকভাবে ভীষণ আঘাত পেয়েছে।
সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেনের স্বামী বলেন, ‘সিকিউরিটি ইনচার্জ আমাকে অপমানিত করার পাশাপাশি একজন শিক্ষককেও অপমানিত করেছেন। যেটা তাদের কাছে কোন ভাবেই কাম্য নয়। আমি এ ধরনের আচরণের শাস্তি দাবি করছি।’
সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন বলেন, ‘ঐ দিন আমার স্বামী সন্তানকে নিয়ে তার মায়ের বাসায় যাচ্ছিলেন। এসময় মেইনগেটে নিরাপত্তা কর্মকর্তা তাকে থামিয়ে অকারণে আপত্তিকর ও অসম্মানজনক কথাবার্তা বলেন। এ নিয়ে প্রক্টরের কাছে মৌখিকভাবে জানালেও কোন সম্মানজনক সমাধান পাইনি। এটা শিক্ষক সমাজের জন্য অপমান ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা।’
এ বিষয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম সেলিম বলেন, ‘ঈদের পর বহিরাগতদের চাপে মেইনগেটে অনেক ভিড় থাকে। ম্যামের স্বামী বাইক নিয়ে ঢোকা বা বের হওয়ার সময় বাইকের হর্ন বাজিয়ে মেইনগেটে উপস্থিত দারোয়ানদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে মেইনগেট খুলে দিতে বলেন। ছোট গেট দিয়েও তিনি বাইক নিয়ে যেতে পারতেন। প্রত্যক্ষদর্শী অনেকের সাথে কথা বললে আসল সত্য সামনে আসবে। তার স্বামীর সাথে কোনরূপ খারাপ ব্যবহার করিনি। আমি শুধু আমার দায়িত্ব পালন করেছি।’
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘এ বিষয়ে অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছি। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বের যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’
রেজিস্টার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘অভিযোগপত্রটি হাতে পেয়েছি। এটি উপাচার্যের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তিনিই যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিবেন।’