নানা দাবি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে অবরোধ করেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তবে তালার কারণ জানতে চাইলে কোনো সুনির্দিষ্ট দাবির কথা উল্লেখ করতে পারেননি তারা। গতকাল সোমবার বেলা পৌনে তিনটা থেকে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে ফটক অবরোধ করে রাখেন তারা।
শাখা ছাত্রলীগ কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আনান, ডেভলোপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের রতন রায়, আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের আল আমিন সুইট, ইংরেজি বিভাগের সজীব আহমেদ ও অর্থনীতি বিভাগের তুষার আহমেদের নেতৃত্বে আন্দোলনে অর্ধশতাধিক ছাত্রলীগ কর্মী অংশ নেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তারা বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন দাবির কথা উল্লেখ করতে থাকেন। তবে সুনির্দিষ্ট কোনো দাবির কথা বলতে পারেননি। আন্দোলনকারী ছাত্রলীগ কর্মী রতন বলেন, আমরা মূলত চার দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছি। আমাদের গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল করতে হবে, বিদ্যুৎ সংকট নিরসন করতে হবে, রাতের বেলা লোডশেডিংয়ের সমস্যা নিরসন ও ইন্টারনেটের সমস্যা সমাধান করতে হবে। আমাদের একবেলা ভাত না খেলেও চলে কিন্তু ইন্টারনেট না হলে আমাদের একবেলাও চলে না। আমরা ইন্টারনেট চাই।
ছাত্রলীগের অবরোধের কারণে ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে যাওয়া পরিবহনগুলো আটকে পড়ে। ফলে, ভোগান্তিতে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক-বাস থেকে নেমে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার উদ্দেশে থানা গেইটের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, কথায় কথায় এভাবে গেইট আটকানো উচিত না। এটা এক প্রকার মানবাধিকার লঙ্ঘন। আমি মনে করি এটা সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি। কিছু হলেই প্রধান ফটকে তালা লাগানোর বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এতে শিক্ষকরা ভোগান্তির শিকার হন।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এই আন্দোলনের সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক। কিন্তু তারা প্রধান ফটকে তালা না লাগিয়ে অন্যভাবেও আন্দোলন করতে পারতো।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মঙ্গলবার প্রক্টর অফিসে দাবিগুলো নিয়ে আসতে বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দাবিগুলো উপস্থাপনের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নিয়েছেন।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কারো দাবি থাকতেই পারে। কিন্ত দাবি আদায়ের একটা প্রক্রিয়া আছে। আমাদের কাছে যৌক্তিক দাবি আসলে আমরা তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো। কিন্তু হুট করে প্রধান ফটকে তালা দেয়া মোটেই সমীচীন নয়।