ইবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে বিভক্ত আওয়ামীপন্থিরা - দৈনিকশিক্ষা

ইবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে বিভক্ত আওয়ামীপন্থিরা

ইবি প্রতিনিধি |

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শিক্ষক সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। আগামী ১৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে প্রার্থীরা মোট তিনটি প্যানেলে ভাগ হয়ে নির্বাচন করবে বলে ইতোমধ্যে নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। 

যার মধ্যে দুইটি ভিন্ন প্যানেলে ক্ষমতাসীন দলের শিক্ষকরা অন্য একটি প্যানেলে জামায়াত পন্থী ইসলামী আদর্শে বিশ্বাসী শিক্ষক সংগঠন গ্রিন ফোরাম এবং একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী লড়ছেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দলের দুইভাগে বিভক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

এ বিষয়ে কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরামের সভায় শিক্ষকরা এক প্যানেল হয়ে নির্বাচনের কথা থাকলেও পরে সেটা হয়নি।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, ৩টি পূর্ণাঙ্গ প্যানেলের মধ্যে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের দুইটি প্যানেল রয়েছে। শাপলা ফোরাম মনোনিত প্যানেল থেকে অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান সভাপতি ও অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান সাধারণ সম্পাদক পদে।

শাপলাপন্থী আওয়ামী শিক্ষকদের অন্য আরেকটি প্যানেলে অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন সভাপতি পদে ও অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক সাধারণ সম্পাদক পদে লড়বেন।

জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের পক্ষ থেকে অধ্যাপক ড. আবু সিনা সভাপতি ও অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান সাধারণ সম্পাদক পদে।

এ ছাড়া সতন্ত্র ভাবে অধ্যাপক ড. খন্দকার তৌহিদুল আনাম সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। অন্যদিকে নির্বাচনে অংশ না নেয়ার কথা জানিয়েছেন বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, শাপলা ফোরামের নির্বাচনের মাধ্যমে প্রগতিশীল শিক্ষকদের নিজেদের মধ্যে নেতৃত্ব যাচাই করা হয়ে থাকে। নির্বাচিতরা পরবর্তীতে শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে প্রতিনিধিত্ব করে।

অতীতে সভাপতি অথবা সাধারন সম্পাদকের যে কোনো একটি পদ শাপলা ফোরামে সংখ্যালঘিষ্ঠ পক্ষকে প্রদান করে সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচনে অংশ নেয়া হতো। তবে এবছর তেমনটি হয়নি। যার ফলশ্রুতিতে প্রগতিশীল শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এ নির্বাচনে দুটি প্যানেল প্রদান করা হয়েছে। তবে নির্বাচনে দুই প্যানেলের বিষয়ে স্ব স্ব পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছেন উভয় পক্ষই।

এ বিষয়ে শাপলা ফোরাম মনোনিত প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘শাপলা ফোরাম থেকে একটা প্যানেলেরই মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। অন্য আরেকটি প্যানেল শাপলার মনোনিত নয়। যারা অন্য আরেকটি প্যানেল দিয়েছে তারা অবশ্যই শাপলার সদস্য তবে ঐ প্যানেলের সঙ্গে শাপলা ফোরাম সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। শাপলা ফোরাম থেকে যদি দুইটি প্যানেল দেয়া হতো তবে সেইটা বিভক্তি ছিলো তবে তা হয়নি। তবে আবার যেকোনো সময় বিষয়টি সমঝোতাও হয়ে যেতে পারে। বিষয়টি নির্ভর করে শাপলার সভাপতি ও সম্পাদকের উপর।’

শাপলাপন্থী ভিন্ন প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রস্তাব করেছিলাম শাপলায় যারা বেশী আসন পেয়েছে তারা পছন্দমতো সভাপতি অথবা সম্পাদক পদে নির্বাচন করবেন বাকীটা সংখ্যালঘিষ্টরা নিবে। এরপর অবশিষ্ট পদগুলো শাপলা ফোরামের প্রাপ্ত পদের আনুপাতিক হারে ভাগ করে নিলেই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো।’

তিনি দাবি করে বলেন, ‘শাপলা ফোরামের তিনটি সভা ও উপাচার্যের অফিসের সভায় এটা প্রতীয়মান হয়েছে যে এটা তাদের পূর্বপরিকল্পিত। তারা বড় দুইটি পদ আকড়ে ধরে রাখবে এবং এই দুইটি পদ নিয়ে সামনে হয়তো তাদের হীন কোনো উদ্দেশ্য আছে। তবে সেই উদ্দেশ্য সাধন হবেনা যদিনা তারা সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনে অংশ না নেয়। যার কারণে আমাদের যৌক্তিক প্রস্তাব তারা গ্রহণ করেনি। ফলে শাপলা ফোরামের একটি অংশ বিক্ষুব্ধ হয়। তাদের মতে বড় দুইটি পদের একটি যদি অপরপক্ষ না ছাড়ে তবে কিসের সমন্বয়।

এ কারণে বাধ্য হয়েই দুইটি প্যানেলে নির্বাচন করা হচ্ছে। শাপলার নেতৃত্বের পিছনে আমাদের মনে হয়েছে তাদের আরো অভিভাবকতুল্য কোনো লোকদের হস্তক্ষেপ আছে। যার কারণে তাদের নির্দেশনার বাইরে এই নেতৃত্ব যেতে পারছেনা। সমঝোতার বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে শাপলার সভাপতি সম্পাদকের উপর।’

তবে শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মন বলেন, ‘সংগঠন থেকে মনোনিত প্যানেলে মাহবুব ও মামুন স্যারকে নেতৃত্বে রাখা হয়েছে। কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যদের নিয়েই এটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অন্য কোনো প্যানেল শাপলার নামে নির্বাচন করতে পারবেনা। যদি শাপলার বাইরে গিয়ে কেউ নির্বাচন করে তবে তা অবশ্যই গঠনতন্ত্রের ব্যতয় ঘটাবে। তবে আমরা আশাবাদী নির্বাচনের সকাল পর্যন্ত সময় আছে, তাদের সুযোগ রয়েছে ঐক্যে ফেরার।’

নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘গত ১০ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বিতরণ ও ১২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা নেয়া হয়। পরে যাচাইবাছাই শেষে ১৩ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। তবে এখন প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই তারা চাইলে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে নিতে পারে। আশা করছি, সকলের সহযোগিতায় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।’

যাত্রাবাড়ীতে অবরোধ, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ - dainik shiksha যাত্রাবাড়ীতে অবরোধ, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ কমপ্লিট শাটডাউন ঘিরে কাউকে সহিংসতা করতে দেওয়া হবে না: কাদের - dainik shiksha কমপ্লিট শাটডাউন ঘিরে কাউকে সহিংসতা করতে দেওয়া হবে না: কাদের ‘ছাত্রলীগ করে, ওকে মেরে ফেল’ - dainik shiksha ‘ছাত্রলীগ করে, ওকে মেরে ফেল’ সারাদেশে কমপ্লিট শাটডাউন চলছে - dainik shiksha সারাদেশে কমপ্লিট শাটডাউন চলছে সারাদেশে ২২৯ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন - dainik shiksha সারাদেশে ২২৯ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032927989959717