মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। তবে আবাসিক হলগুলো এখনো এলোটমেন্টের আওতায় না আসায় অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কর্তৃপক্ষ। রোববার (১৬ জুন) বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রোববার (১৬ জুন) থেকে ২৪ জুন সোমবার পর্যন্ত ৯ দিনের ছুটির ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই বাড়ি ফিরেছেন। তবে ঈদের পরেই ফাইনাল পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট, টিউটোরিয়াল ইত্যাদি থাকার কারণে এখনো কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী হলেই অবস্থান করছেন। তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাখা হয়নি কোনো বিশেষ আয়োজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, ঈদের ছুটির শেষেই টিউটোরিয়াল। অ্যাসাইনমেন্ট তো আছেই। কয়দিন পর আবার ফাইনাল পরীক্ষা। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাস থেকে বাড়িতে আসতে যেতে লেগে যায় ৩ থেকে ৪ দিন। সেজন্য ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বাড়ি যাওয়া হয়নি। হলের পাশের ক্যান্টিন বন্ধ, হোটেলগুলোও বন্ধ। খাবার নিয়ে টেনশনে থাকতে হয়। ঈদ উপলক্ষে প্রশাসনের পক্ষ কোনো আয়োজন থাকলে আমরা যারা হলে অবস্থান করছি তাদের জন্য ভালো হতো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী জানান, এই ঈদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদ উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের জন্য ৫টি খাসি জবাই করা হবে। এদিকে আমাদের চবিতে কোনো আয়োজনই রাখা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলী আরশাদ চৌধুরী বলেন, উপাচার্যের সঙ্গে সব হলের প্রভোস্টদের এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। হলগুলোতে এলোটমেন্ট না থাকায় অফিসিয়ালি ঈদে শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা জানি না কতজন শিক্ষার্থী বৈধভাবে হলে অবস্থান করছে। বৈধভাবে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করলে আমরা হয়তো প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে দাবি জানাতে পারতাম। এ ছাড়া আলাদাভাবে প্রভোস্টদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের সামর্থ্য নেই।
প্রীতিলতা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. লায়লা খালেদা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঈদে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। হলের পক্ষ থেকে আমরা কিছুটা ব্যবস্থা করতাম। কিন্তু এবার হলে বৈধ শিক্ষার্থীদের সংখ্যা না জানার কারণে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। আমরা মেয়েদের হলে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সেটা ছেলেদের হলেও প্রভাব পড়বে তাই কোনো ব্যবস্থা নেই।
সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শেখ সাদী বলেন, উপাচার্য থেকে এ বিষয়ে নিষেধ থাকার কারণে আমরা কোনো ব্যবস্থা করতে পারছি না। আমরা ব্যক্তিগতভাবে চেয়েছিলাম সামান্য ব্যবস্থা করতে। কিন্তু এ বিষয়ে মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার কারণে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছি না।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. অহিদুল আলম বলেন, এ বিষয়ে আমাদের মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছিল। বিভিন্ন কারণে হলে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। হলে যারা অবস্থান করে তারা হল এলোটমেন্টের বাইরে। এলোটমেন্ট না থাকায় আমরা বুঝতে পারছি না কতজন শিক্ষার্থী হলে অবস্থান করে।