আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঈদযাত্রা ও কোরবানির পশুর হাট নিয়ে ২৪টি নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত চিঠিতে এসব নির্দেশনা দেয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপকমিশনার মো. ফারুক হোসেন।
ডিএমপি সূত্র জানায়, ঘরমুখী মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্নে করতে ডিএমপির ২৪টি নির্দেশনা মেনে চলতে অনুরোধ করেছে। এর মধ্যে আছে হাটে ট্রাক থেকে গরু নামানোর এবং বিক্রি করার সময়ে সংশ্লিষ্ট সড়ক-মহাসড়কের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা যেন ব্যাহত না হয়। নৌপথে ট্রলারের মাধ্যমে রাজধানীতে আসা কোরবানির পশু যেন সুশৃঙ্খলভাবে নির্ধারিত হাটে যেতে পারে, সে বিষয়ে যথাযথ নজরদারি রাখতে হবে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গরুর হাটকেন্দ্রিক স্বাচ্ছন্দ্য যাতায়াতের জন্য পার্কিংয়ের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। যত্রতত্র যেন কোরবানির পশুর হাট না বসে এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সঠিক থাকে, তা নিশ্চিত করা। পশুবাহী গাড়িগুলো অবশ্যই সিটি করপোরেশন অনুমোদিত হাটের ভেতর লোড-আনলোড করতে হবে। পশুর হাটকেন্দ্রিক সুষ্ঠু ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশন, হাট ইজারাদার, পরিবহনমালিক, শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করা হবে। টার্মিনাল ও পশুর হাটকেন্দ্রিক সঠিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে। টার্মিনালকেন্দ্রিক যাত্রী ওঠানামা টার্মিনালের ভেতর থেকেই করতে হবে।
ডিএমপি জানায়, যাত্রী পরিবহন ও পশু বহনকারী গাড়ির চলাচল সুশৃঙ্খল করার জন্য রাজধানীতে ঢোকা ও বের হওয়ার পথে সমন্বয়ের মাধ্যমে পরিবহন চালাতে হবে। রাজধানী থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার যানবাহনগুলোকে অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহন থেকে নিবৃত্ত থাকতে হবে। আন্তজেলা পরিবহনের যাত্রীরা বা গমনপ্রত্যাশীদের প্রধান সড়কে এসে অপেক্ষা বা দাঁড়িয়ে না থেকে টার্মিনালের ভেতরে অবস্থান করতে হবে। সংশ্লিষ্ট যাত্রীরা অবশ্যই যানবাহনে সঙ্গে টিকিট রাখবেন।
ঈদযাত্রায় কোনো যানবাহনেই ছাদের ওপর অতিরিক্ত যাত্রী বহন করবে না বলে ডিএমপি কমিশনারের চিঠিতে বলা হয়েছে। যাত্রী তোলার ক্ষেত্রে বাসের চালকেরা এমন কোনো অসম প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন না, যাতে সড়কের শৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটে ও জীবনহানির আশঙ্কা থাকে। টার্মিনালভিত্তিক কাউন্টারগুলোতে ভাড়ার তালিকা প্রদর্শন করতে হবে। ঈদের আগের তিন দিন কোনো ভারী যানবাহন যেন ঢাকা মহানগরীতে না ঢোকে, সে বিষয়ে দৃষ্টি রাখতে হবে। ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন এবং বিমানবন্দরকেন্দ্রিক রুটগুলো চলাচল উপযোগী রাখতে সচেষ্ট থাকা। জনগণ যেন যাত্রাপথে অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ না করে, সে বিষয়ে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা। যাত্রাপথে ব্যক্তিগত মালামালে ও টাকা যেন সাবধানে রাখে, সে বিষয়ে তাদের সচেতন করা।
মোটরসাইকেলে চালকদের জন্যও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ডিএমপি কমিশনারের চিঠিতে। চালক ও আরোহীদের ঢাকার বাইরে দূরপাল্লার যাতায়াতের সময় অবশ্যই হেলমেট ব্যবহার করতে হবে। ঈদের আগে-পরে ফাঁকা রাস্তায় ওভারস্পিড প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ঈদকে ঘিরে বিনোদনকেন্দ্রিক রুটগুলোর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সঠিক রাখতে সচেষ্ট থাকা। আনফিট ও রুট পারমিটবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান চলমান আছে, থাকবে। প্রধান প্রধান ঈদ জামাতকেন্দ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সচল রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।