ঈদ নেই রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের - দৈনিকশিক্ষা

ঈদ নেই রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডব এখনও আতংকিত করে রেখেছে কয়রার দশহালিয়া গ্রামের মানুষকে। এলাকার ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ আটকানো সম্ভব হলেও প্লাবিত এলাকায় মানুষ এখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। ভাঙা ঘরে বসবাস করছেন অনেকেই। একমাত্র উপার্জনের উৎস চিংড়ির ঘের প্লাবিত হওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা।

ত্রাণ কার্যক্রম সীমিত থাকায় এই এলাকার ছিন্নমূল মানুষগুলোর দিন কাটছে চরম হতাশার মধ্যে। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে চলে এসেছে পবিত্র ঈদুল আজহা। যা ওই গ্রামের মানুষের মাঝে বয়ে আনতে পারেনি আনন্দ। এলাকার শত মানুষের ঈদ কেড়ে নিয়ে গেছে রেমাল।

  

শুধু দশহালিয়া গ্রামে নয়, রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত কয়রার সব মানুষেরই একই চিত্র। উপকূলীয় কয়রার শত শত মানুষের এবারের ঈদ কেড়ে নিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। দিনে অন্তত একবার খাবারের চিন্তায় ব্যাকুল পরিবারগুলোর কাছে নেই কোনো ঈদের আনন্দ।

রেমালে কপোতাক্ষ নদের ভাঙনে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু হারিয়ে আনন্দের রেশ মাত্র নেই তাদের মাঝে। ঈদে সেমাই, পায়েস খাওয়া হবে না অনেক পরিবারের।

উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া গ্রামের তানিয়া খাতুন, নাজমা বেগম, শহিদুল্যাহ গাজীসহ আরও অনেকেই বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে তাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। তাদের এখন রয়েছে শুধু হাহাকার।

বয়সের ভারে এবং শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় চলতে ফিরতে কষ্ট হয় গ্রামের আফছার উদ্দীনের। এরপরও পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে ৭০ বছর বয়সে এসেও জীবিকা নির্বাহ করে চলেছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘কী আর করবো সব সময় নদীর ভাঙাগড়ার মধ্যে বসবাস করতে হয়। লোনা জল সবকিছু বিলীন করে দিয়েছে, জমিজমা ঘরবাড়ি সবই তো ভাইসে গেছে। শুধু ঘরখানই দাঁড়াই আছে। নদীতে জোয়ার আসলে সব সময় আতংকিত হয়ে পড়তে হয়।’

শুধু তিনি নন এরই মধ্যে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সংগ্রাম করছেন তার মতো উপকূলের বাসিন্দারা।

রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঐ গ্রামের ৬০টি পরিবার। তাদের অনেক কিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে কপোতাক্ষের লোনা জলে। অনেকের বাড়িতে রাখা ধান ছিল। রেমালের দিন জলোচ্ছ্বাস শুরু হওয়ার সময় কিছু জিনিসপত্র সরাতে পারলেও ধান, কাপড়-চোপড়, এমনকি হাঁড়ি-পাতিল, থালাবাটি সব হারিয়ে অনেকেই এখন নিঃস্ব। কপোতাক্ষের তীরে এই দশহালিয়া গ্রামের সব ঘরেই এখন জলোচ্ছ্বাসের ক্ষতচিহ্ন। এখানে এমন কোনো ঘর নেই, যা ঘূর্ণিঝড়ের রাতে প্লাবিত হয়নি। সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে অনেকের ঘরবাড়ি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোস্তফা কামাল বলেন, উপকূলীয় অঞ্চল দূর্যোগপ্রবণ এলাকা। প্রতি বছরই ঝড়ের তাণ্ডব মোকাবেলা করতে হয় এ দশহালিয়া বেড়িবাঁধের তীরে বসবাস করা শত শত মানুষকে। দুর্যোগ-দুর্বিপাকে এখানকার মানুষের নিয়তির উপর ভর করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। ঝড়ের মৌসুমে নদী পাড়ের একদিকে ঝড়ের প্রকোপ, অন্যদিকে উত্তাল নদী হয়ে ওঠে অগ্নিমূর্তি। সৃষ্টিকর্তার নাম ডাকা ছাড়া নদী পাড়ের মানুষের আর কোনো উপায় থাকে না।

মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্যাহ আল মাহমুদ বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধগুলো টেকসই করা না হলে প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হবে উপকূলবাসীকে।

তিনি জরুরি ভিত্তিতে ঝূকিপূর্ণ বেড়িবাঁধগুলো সংস্কারের দাবি জানান।

খুলনা জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুল্যাহ আল মামুন লাভলু বলেন, রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে পর্যাপ্ত সহযোগিতা করা প্রয়োজন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) বিএম তারিক-উজ-জামান বলেন, রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের মাঝে সরকারি ও বেসরকারিভাবে ত্রাণ সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সরকারিভাবে বিভিন্ন সহযোগিতা করা হচ্ছে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট বেকারদের সবচেয়ে বড় কারখানা, মন্তব্যের জেরে সভায় বাগ্‌বিতণ্ডা - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট বেকারদের সবচেয়ে বড় কারখানা, মন্তব্যের জেরে সভায় বাগ্‌বিতণ্ডা গবেষণা কাজে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর চৌর্যবৃত্তি - dainik shiksha গবেষণা কাজে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর চৌর্যবৃত্তি বন্যাকবলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য চেয়েছে অধিদপ্তর - dainik shiksha বন্যাকবলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য চেয়েছে অধিদপ্তর প্রতারণা এড়াতে সতর্ক করলো ঢাকা শিক্ষা বোর্ড - dainik shiksha প্রতারণা এড়াতে সতর্ক করলো ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ঢাবির সিনেটে সর্বজনীন পেনশন বাতিলের প্রস্তাব - dainik shiksha ঢাবির সিনেটে সর্বজনীন পেনশন বাতিলের প্রস্তাব ৮৫ শতাংশ ভিন্ন বিষয়ে ডিগ্রিধারীরা শেখাচ্ছেন ইংরেজি-গণিত - dainik shiksha ৮৫ শতাংশ ভিন্ন বিষয়ে ডিগ্রিধারীরা শেখাচ্ছেন ইংরেজি-গণিত দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে - dainik shiksha র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে এবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা’ - dainik shiksha এবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা’ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003371000289917