বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের ( বিআইডিএস) দুটি জরিপ অনুযায়ী দেশের স্নাতক ( অনার্স) ডিগ্রীধারীদের ৩৭ থেকে ৬৬ শতাংশ বেকার। অ্যাকশন এইডের (২০১৯) গবেষণা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটের ৪৬ শতাংশের বেশিই বেকার। বিশ্বব্যাংক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর জরিপ করেছিল। তাতেও দেখা গেছে, স্নাতক পাস করা শিক্ষার্থীদের ৪৬ শতাংশ বেকার, যারা তিন বছর ধরে চাকরি খুঁজছেন। ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্টের ইকোনমিস্টে ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের ( ই আইইউ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের ৪৭ শতাংশ স্নাতকই বেকার,যেখানে ভারতে ৩৩ শতাংশ, পাকিস্তানে ২৮, নেপালে ২০ ও শ্রীলংকায় ৭ দশমিক ৮ শতাংশ বেকার ।
এসব তথ্য পর্যালোচনা করে ধারনা করা যায়, প্রতি বছর কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করা ২০-২২ লাখ মানুষের প্রায় অর্ধেক বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট কিন্তু চাকরি পাচ্ছেন না। করোনা অতিমারীর কারণে উচচশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা আরো বেড়ে গেছে। সংকুচিত হয়ে আসছে চাকরির বাজার, তৈরি হচেছনা নতুন কর্মক্ষেত্র, করোনার কারণে পুরানো প্রতিষ্ঠানে বাড়ছে চাকরি থেকে ছাঁটাই। এই এক অসহনীয় চিত্র।এর বিপরীতে রয়েছে আর একটি চিত্র, আমাদের দেশে প্রতিষ্ঠিত অনেক প্রতিষ্ঠান কিংবা বিদেশি প্রতিষ্ঠান আমাদের দেশে যারা কাজ করছেন তারা উপযুক্ত মানবসম্পদ পাচ্ছেন না। বিধায় প্রতিবেশী দেশ থেকে প্রচুর দক্ষ জনশক্তি নিয়ে আসা হচ্ছে ।
চতুর্শ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের সুদক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার কথা শোনা যাচ্ছে বহুদিন থেকেই। বেসরকারি কলেজের ডিগ্রি স্তরে প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা চালু করা ও গুনগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে কলেজগুলোতে পর্যাপ্ত ল্যাব, অনলাইন ক্যাম্পাস নেটওয়ার্ক ও ই-লাইব্রেরির সুবিধা চালু করার কথাও আলোচিত হয়েছে। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি ও ক্ষেত্রবিশেষে বিনামূল্যে পাঠদানের ব্যবস্থা, কম সুদে ঋণ প্রদানের কথাও শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট ( সিইডিপি) থেকে কৌশলপত্রের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে দেশের কয়েকটি স্থানে ও জাতীয় পর্যায়ে ওয়ার্কশপের আয়োজন করেছে সিইডিপি। আরও বড় আকারে একটি কর্মশালা করে শিক্ষাবিদদের মতামত নেওয়া হবে। এরপর চূড়ান্ত করা হবে কৌশলপত্র। কৌশলপত্রের খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলো পরিচালনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি নীতিমালা তৈরি করা হবে অর্থাৎ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত দুই সহস্রাধিক কলেজের শিক্ষার মান বাড়াতে তৈরি হচ্ছে নতুন কৌশলপত্র। এতে কলেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, শিক্ষাবিদরাই হবেন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি।
বেসরকারি কলেজগুলোর পরিচালনা পর্ষদ বা গভর্নিং বডি গঠনের বিষয়ে খসড়ায় বলা হয়েছে, জিবির চেয়ারম্যান হবেন একজন শিক্ষাবিদ। সদস্যরা মনোনীত হবেন শিক্ষাগত যোগ্যতা ও মেধা অনুযায়ী। সদস্য সংখ্যা বর্তমানে যা আছে-তার চেয়ে কমাতে হবে। তাঁদের কাজ করার ক্ষেত্র নির্ধারণ করে নিতে হবে। জিবির অ্যাডহক ও একাডেমিক কমিটিতে সদস্যদের যোগ্যতা ও সদস্য কমানোর জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা সংশোধনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী বোর্ড অব ডিরেক্টর এবং বোর্ড অব স্টাডিজ গঠন করতে হবে। বোর্ডগুলো তাদের নির্দিষ্ট পরিসরে দায়িত্ব পালন করবে। বোর্ডের কর্মকান্ড তদারকিতে নজরদারি বাড়াতে হবে। কলেজগুলোতে গবেষণা, গবেষণার ফল কাজে লাগানো এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনা গড়তে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয এবং মাধ্যমিক ও উচচ শিক্ষা অধিদপ্তরের মধ্যে ঘনিষ্ঠ কর্মসম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ জন্য উভয় প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করার কথাও শোনা যাচ্ছে। উদ্যোগটি নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী। কারণ, আমাদের আর উচ্চশিক্ষিত বেকার তৈরি করা ঠিক হবে না।
শিক্ষকদের পাঠদানের দক্ষতা বাড়াতে তাদের তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মানোন্নয়নসহ ধারাবাহিকভাবে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাড়াতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তির ওপর শিক্ষকদের নিয়মিত ওয়ার্কশপ আয়োজন, অনলাইনে গবেষণার কথা বলা হয়েছে। শিক্ষকরা বিভিন্ন বিষয় এখানে যুক্ত করবেন এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে তা বিতরণ করবেন। কলেজ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মমুখী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করবেন, যেন শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়ে হাতে-কলমে শিখতে পারেন। কৌশলপত্রের খসড়ায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক পাঠদন বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। আর্থিক সঙ্কটে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছে। বৃত্তি ও উপবৃত্তির আওতায় অথবা বেসরকারি কলেজগুলোতে বিনামূল্যে পাঠদানের ব্যবস্থা রাখতে হবে। কলেজগুলোতে এ বিষয়ে ডিগ্রী প্রোগ্রামের সক্ষমতা বাড়াতে হবে যেখানে পর্যাপ্ত ল্যাব, ক্যাম্পাস নেটওয়ার্ক ও ই-লাইব্রেরির সুবিধা থাকবে। এ জন্য দক্ষ ও অভিজ্ঞ লোক নিয়োগ দিতে হবে। সব কলেজের শিক্ষকদের জন্য দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তুলতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে বিশেষ বিবেচনায় প্রোগ্রাম চালু করতে হবে। বলা হয়েছে, শিক্ষার্থী ভর্তিতে লিঙ্গ ও ধর্মভিত্তিক সমতা আনতে হবে। শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পাঠদানের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রাইভেট ও কোচিংয়ের ওপর নির্ভরতা কমানো নিশ্চিত করতে প্রতিদিন যথাযথ ক্লাস নিশ্চিত করতে হবে। আরও বলা হয়েছে ,বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীদের কম সুদে শিক্ষা ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। ঋণের জন্য নতুন নতুন সংস্থা ও তহবিলের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে দানভিত্তিক তহবিলও গড়ে তোলা যেতে পারে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রামগুলোর কারিকুলাম চার বছর পরপর হালনাগাদ করার নিয়ম রয়েছ ,যদিও এ বিষয়ে অনীহার পাশাপাশি অনেক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিষ্ক্রিয়তাও ছিল। সম্প্রতি কারিকুলাম নিয়মিত হালনাগাদকরণে কঠোর হয় ইউজিসি। ওবিই পদ্ধতির কারিকুলাম প্রণয়ন করে তা অনুমোদনের জন্য জমা না দিলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। তারপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সতর্ক হয়। ক্রমান্বয়ে ইউজিসিতে জমা পড়তে থাকে নতুন পদ্ধতির কারিকুলাম। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আউটকাম বেজড এডুকেশন ( ওবিই) পদ্ধতির কারিকুলাম প্রণয়নের জন্য দুই বছর ধরে দফায় দফায় নির্দেশনা দিয়েছে মঞ্জুরি কমিশন। শুরুর দিকে কিছুট অনীহা দেখালেও সবশেষ ছয় মাসে ওবিই কারিকুলাম প্রণয়নের ক্ষেত্রে বেশ ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। ইউজিসির তথ্যমতে, হাতেগোনা কিছু প্রতিষ্ঠান ছাড়া সিংহভাগ উচচশিক্ষালয়ই ওবিই পদ্ধতিতে কারিকুলাম প্রণয়ন করে তা অনুমোদনের জন্য কমিশনে পাঠিয়ে দিয়েছে। নতুন পদ্ধতির এ শিক্ষাক্রম পুরোদমে বাস্তবায়ন শুরু হলে দেশের বেসরকারি খাতের উচ্চশিক্ষায় বড় পরিবর্তন আসবে বলে ধারনা সংশ্লিষ্টদের।প্রচলিত এ শিক্ষাক্রমে হালনাগাদের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে বেশকিছুদিন ধরে ওবিই পদ্ধতির কারিকুলাম প্রণয়নের জন্য তাগাদা দিয়ে আসছে কমিশন। এর অংশ হিসেবেই সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের বিভিন্ন প্রোগ্রাম পরিচালনার জন্য ওবিই কারিকুলাম প্রণয়ন করে কমিশনে পাঠিয়েছে। মোটামুটি প্রায় সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এরই মধ্যে ওবিই কারিকুলাম পাঠিয়েছে। জমা দেওয়া কারিকুলামের মান যাচাইয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞ শিক্ষকদের কাছে পাঠানো হচ্ছে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে অনুমোদন প্রক্রিয়ার পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কারিকুলাম অনুমোদনের ক্ষেত্রে শিক্ষক সংখ্যা, শিক্ষকের যোগ্যতা ও ল্যাব সুবিধা এবং মানের বিষয়গুলোও যাচাই-বাছাই ও পরিদর্শন করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে নতুন পদ্ধতির এ কারিকুলামকে কেন্দ্র করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।
কারিকুলাম অনুমোদন ও হালনাগাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় আবেদন করতে হয়। এরপর সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে সেটি হালনাগাদ বা অনুমোদন দেয় ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ। কারিকুলাম অনুমোদন বা হালনাগাদের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কমিশন নির্ধারিত হারে ফি পরিশোধ করতে হয়। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের হালনাগাদকৃত সিলেবাস অনুমোদন করতে বিজ্ঞান , প্রযুক্তি ও প্রকৌশলন অনুষদ বা স্কুলের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা, ব্যবসায় প্রশাসনের ক্ষেত্রে ৪০ হাজার, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ক্ষেত্রে ২৫ হাজার এবং অন্যান্য প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে ৩০ হাজার টাকা করে ফি পরিশোধ করতে হয়। এ ছাড়া ডিপ্লোমা বা পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমার ( ছয় মাস থেকে এক বছর) ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকা করে ফি জমা দিতে হয়। আর হালনাগাদের ক্ষেত্রে ফির পরিমান অর্ধেক। নির্দেশনা প্রদানের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য ওবিই কারিকুলাম বিষয়ে প্রশিক্ষণেরও আয়োজন করে আসছে কমিশন। এছাড়া বিভিন্ন নিজস্ব উদ্যোগেও এ বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করছে। ওবিই কারিকুলাম প্রণয়নে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি টেমপ্লেটও তৈরি করে দেয় কমিশন। এটিও একটি পজেটিভ দিক।
শিক্ষার আশানুরুপ মান অর্জনে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। এ জন্য শিক্ষার মানোন্নয়ন ও আন্তর্জাতিকীকরণে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের কার্যকর ভূমিকা পালন করা দরকার। ইউজিসি থেকে প্রকাশিত ৪৮তম বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা বিষয়ে দিনব্যাপী এক কর্মশালায় এসব আলোচনা হয়।দেশের উচ্চশিক্ষা বিস্তারে সরকার নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করছে, তবে উচ্চশিক্ষার বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত মানে আমরা পিছিয়ে আছি। বৈশ্বিক র্যাংকিংয়ে আমরা সম্মানজনক অবস্থায় নেই। আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে প্রত্যাশিত স্থান পেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য নিয়মিত হালনাগাদ করতে হয়। দেশ-বিদেশের ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, শিক্ষার্থী-বিনিময় প্রোগ্রাম তথ্যসমৃদ্ধ বার্ষিক প্রতিবেদনের গুরুত্ব অপরিসীম। বার্ষিক প্রতিবেদন ও তথ্য ছক পূরন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। বার্ষিক প্রতিবেদনে ইউজিসিসহ দেশের ৫০টি পাবলিক ও ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষা, গবেষণা ও অবকাঠামো সংক্রান্ত তথ্য যুক্ত করা হবে। কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তগুলো পর্যালোচনার জন্য উপস্থাপন করা হয় এবং সংশ্লিষ্টদের মতামত অন্তুর্ভুক্তির মাধ্যমে চূড়ান্তকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শিক্ষাবিদরা বলছেন, দেশের বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়েই অনেকটা পুরানো ও গতানুগতিক শিক্ষাক্রমে পাঠদান দেওয়া হয়। সময়ে সঙ্গে তাল না মিলিয়ে হালনাগাদ ন করায় কর্মবাজার ও বিশ্ববাজারে সামঞ্জ্যতা হারিয়েছে এসব শিক্ষাক্রম।এ অবস্থায় ওবিই কারিকুলাম বাস্তবায়ন সম্ভব হলে উচ্চশিক্ষায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে, যা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্যও সুফল বয়ে আনবে। আউটকাম বেজড এডুকেশন বলতে বোঝায়’ নিড বেজড এডুকেশন’ অর্থাৎ একজন শিক্ষার্থী ডিগ্রী নিয়ে বের হওয়ার পর কর্মবাজারে গিয়ে তার যে বিষয়গুলো জানা বা তার মধ্যে যে দক্ষতাগুলো থাকা দরকার–শিক্ষা ব্যবস্থায় তা নিশ্চিত করাই হলো ওবিইর লক্ষ্য। এজন্য সারা বিশ্বই এখন ওবিই কারিকুলামের দিকে যাচ্ছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এদিকে এগুচ্ছে , বিষয়টি অবশ্যই ইতিবাচক। তবে শুধু কারিকুলাম প্রণয়ন করলে হবে না, তা বাস্তবায়নের জন্য যোগ্য শিক্ষক ও উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
লেখক : মাছুম বিল্লাহ, প্রেসিডেন্ট- ইংলিশ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ( ইট্যাব)