উপাচার্য, প্রক্টর ও হল প্রোভোস্টসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের পদ শূন্য থাকা অবস্থায় আগামীকাল রোববার খুলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। এর আগে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্ব-শরীরে ক্লাস শুরুর ঘোষণা দেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবির চৌধুরী।
জানা যায়, গত ১১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড সাদেকা হালিম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলামসহ প্রক্টরিয়াল বডি ও হল প্রভোস্টকে ১২ আগস্ট বিকেল তিনটার মধ্যে পদত্যাগ করতে আলাটিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা। ওইদিন সন্ধ্যায়ই পদত্যাগের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টরিয়াল বডি ও হল প্রোভোস্ট।
পরের দিনই পদত্যাগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক, ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালকসহ গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের প্রশাসকরা। পদত্যাগ করেন একমাত্র ছাত্রী হলের কয়েকজন হাউজ টিউটরও। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পদে নতুন উপাচার্য নিয়োগ পাওয়া পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার নিয়োগ দিয়েছেন ট্রেজারার অধ্যাপক হুমায়ুন কবির। কোষাধ্যক্ষ কর্তৃক দেয়া এ নিয়োগ নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক।
তবে গুরুত্বপূর্ণ এসব দপ্তরের পদ শূন্য থাকা অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্ব-শরীরে ক্লাস শুরু হওয়ায় বাড়তে পারে জটিলতা। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ শূন্য সব পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের থেকেই নিয়োগ দেয়া হোক।
এ বিষয়ে জবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, আমরা চাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকেই নিয়োগ দেয়া হোক। আমাদের কষ্ট বাইরের কেউ বুঝবে না। আমরা বাইরের কাউকে আমাদের অভিভাবক হিসেবে চাই না।
আরেক শিক্ষার্থী নূর নবী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব গুরুত্বপূর্ণ পদে বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউকে নিয়োগ পাওয়া মানে হলো অতিথির মতন। আমাদের শিক্ষার্থীদের চাওয়া পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা যতোটা বুঝবেন বাইরের কেউ অতোটা বুঝবেন না। ১৯ বছর হতে চললো, এতোদিনেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হওয়ার মতো নেই? নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউকে উপাচার্য হিসেবে পাওয়া শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন বলেন, বিগত উনিশ বছরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যাশিত অগ্রগতি লাভ করেনি। এর অন্যতম কারণ হলো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভিসি ও ট্রেজারার না হওয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে যারা জানেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে যারা একাত্ম আছেন; এমন প্রফেসররাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং ট্রেজারার হবেন বলে আমরা আশা করছি।
এসব গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য থাকা অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবির চৌধুরী বলেন, আমরা বিষয়গুলো নিয়ে ভাবছি। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাও জরুরি। খুব দ্রুতই এই সংকট কাটবে। সবাইকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে ভালো থাকতে হবে।