আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) যুগে টিকে থাকতে শিক্ষার্থীদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি বলেছেন, আগে ছেলেমেয়েরা কোনো কিছু জানতে গুগল করতো। এখন এসেছে চ্যাটজিপিটি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। এই আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের যুগে টিকে থাকতে আমাদের শিক্ষার্থীদের সচেতন থাকতে হবে। সত্যিকারের মানুষ হতে হবে।
বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্বাধীনতা-শিক্ষক সমাজ আয়োজিত আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
পনেরো আগস্টের হত্যাকাণ্ড নিয়ে অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে জয় বাংলা স্লোগানের মধ্য দিয়ে। কিন্তু আমরা দেখলাম বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগানের আলোকে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ স্লোগানের আর্বিভাব হলো এদেশে। আমরা দেখতে পেলাম আগে যারা এতোদিন আমাদের দেশকে স্বীকৃতি দেয়নি তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিতে থাকলো। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, চীন, যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তারাই দেশের মন্ত্রীত্বের চেয়ারে। এটা আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় দুঃখের বিষয়।
তিনি আরো বলেন, রক্ত যদি স্বাধীনতার মূল্য হয়ে থাকে তাহলে বাংলাদেশের চেয়ে দামী আর কোনো দেশ নেই। যে পাকিস্তান আমাদের ধ্বংস করতে চেয়েছিলো সেই পাকিস্তানের অবস্থা এখন খুবই নাজেহাল। তারা ইতোমধ্যে মোরালি দেউলিয়া হয়ে গেছে। অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হতে বাকি। আমি অপেক্ষা করছি কবে শুনতে পাবো পাকিস্তান দেউলিয়া হয়ে গেছে।
ভারতের চাঁদে অবতরণের কথা উল্লেখ করে জাফর ইকবাল আরো বলেন, এটা দেখে আমার হিংসা হয়েছে। আমার সবচেয়ে দুঃখ লাগে আমরা এখনো টেকনোলজির দিক থেকে অগ্রসর হতে পারিনি। আমাদের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য ইলন মাস্কের থেকে রকেট ধার করতে হয়েছে। আমার বিশ্বাস বঙ্গবন্ধু আজ বেঁচে থাকলে এটা হতে দিতেন না। বঙ্গবন্ধুর টেকনোলজির দিকে বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি ছিলো। তার লেখা 'আমার দেখা নয়া চীন' বইতে দেখতে আমরা তা দেখতে পাই।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইমদাদুল হক বলেন, সামনের নির্বাচনকে ঘিরে দেশকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি যেন ক্ষমতায় থাকতে না পারে সেজন্য দেশি বিদেশি নানা চক্রান্ত চলছে। এ সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা-শিক্ষক সমাজের সভাপতি অধ্যাপক ড. হোসেন আরা বেগমের সভাপতিত্বে ও সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার মোস্তাসির হাসান এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড কামাল উদ্দীন আহমেদ। এছাড়া আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ইশতিয়াক রেজা, অধ্যাপক লাইসা আহমদ লিসা ও স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজের সাধারণ সম্পাদক কাজী মো নাসির উদ্দীন। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্তিত ছিলেন।