একসঙ্গে এইচএসসি পাস করলেন স্বামী-স্ত্রী - দৈনিকশিক্ষা

একসঙ্গে এইচএসসি পাস করলেন স্বামী-স্ত্রী

দৈনিক শিক্ষাডটকম, কিশোরগঞ্জ |

শিক্ষার কোনো বয়স নেই। যে কোনো বয়সেই যে পড়ালেখা শুরু করা যায় বিয়ের পরেও তা প্রমাণ করেছেন কিশোরগঞ্জের মো. বদিউল আলম (নাঈম) ও শারমীন আক্তার দম্পতি। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায়  এ দম্পতি  সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন।  বদিউল আলম পেয়েছেন জিপিএ ৪.২৯ এবং শারমীন আক্তার পেয়েছেন জিপিএ ৪.৫। তারা বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ঢাকার অধীনে কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার লক্ষ্মীপুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। এই দম্পতি ৪৩ ও ৩৩ বছর বয়সে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।

২০২২ খ্রিষ্টাব্দে নরসিংদী জেলার বেলাবো উপজেলার বিন্নাবাইদ দারুল উলুম দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল (এসএসসি) পাস করেন এ দম্পতি। তখন মো. বদিউল আলম নাঈম পেয়েছিলেন জিপিএ ৪.৯৫ ও শারমীন আক্তার পেয়েছিলেন জিপিএ ৫। 

বিয়ের আগে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দিতে না পারলেও কয়েকবার পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ব্যবসা ও সাংসারিক চাপে শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। তবে মনের জোর এবং স্বজনদের উৎসাহে পড়াশোনা করে এবার এইচএসসি ও এর আগে এসএসসি পাস করেছেন এ দম্পতি।

জানা যায়, ২০২০ সালে তৎকালীন কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলাম লুনা ও বড় মেয়ের উৎসাহে নতুন করে পড়াশোনা করার আগ্রহ জাগে তাদের। নয়তো নতুন করে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি মোটেও সম্ভাব ছিল না এ দম্পতির। তারা দুজন ওই বছরই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিন্নাবাইদ দারুল উলুম দাখিল মাদরাসায় ভর্তি হন।

মো. বদিউল আলম কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের দ্বাড়িয়াকান্দি গ্রামের মো. কনু মিয়া ও মোছা. সাজেদা দম্পতির ছেলে। তিনি একজন ঠিকাদার। তিনি ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও আর পরীক্ষা দেওয়া হয়নি তখন।

২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে নবম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় মো. বদিউল আলমের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও বড় মেয়ে বুশরা আক্তার বীথি তার গর্ভে আসায় আর পরীক্ষা দিতে পারেননি। তখন থেকেই লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায় তার।

ঠিকাদার মো. বদিউল আলম ও শারমীন আক্তার দম্পতির সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে বুশরা আক্তার বীথি এবার স্থানীয় ছয়সূতী ইউনিয়ন হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী ও মেজো ছেলে রেদোয়ান আলম সিয়াম একই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। সবার ছোট মেয়ে তাসনীম (৫) এখনো স্কুলে ভর্তি হয়নি। 

স্থানীয় বাসিন্দা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, পড়াশোনা ছাড়া বর্তমান সময়ে চলা অনেক কঠিন। তবে এই বয়সে এসেও তাদের পড়াশোনার প্রতি যে আগ্রহ আছে তা প্রশংসনীয়। শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাক। তাদের জন্য শুভ কামনা।

লক্ষ্মীপুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম হায়দার বলেন, শিক্ষার কোনো বয়স নেই। বদিউল আলম ও শারমীন আক্তার দম্পতি এ বছর আমাদের কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে ভালো ফলাফল অর্জন করেছেন। তারা কলেজে নিয়মিত ছিলেন এবং লেখপড়ায়ও মনোযোগী ছিলেন। আমি প্রায়ই ক্লাস রুমে গিয়ে তাদের খোঁজ-খবর নিতাম। ব্যবসা-সংসার সামলিয়েও যে পড়াশোনা করা যায়—এটা দেশবাসীর কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমরা খুবই খুশি।

প্রাথমিকে ২০ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে - dainik shiksha প্রাথমিকে ২০ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে স্কুল শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত - dainik shiksha স্কুল শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত নতুন পাঠ্য বইয়ে থাকছে শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধের বীরত্বগাথার গল্প - dainik shiksha নতুন পাঠ্য বইয়ে থাকছে শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধের বীরত্বগাথার গল্প শিক্ষার্থীদের দুপক্ষের দফায় দফায় সং*ঘর্ষে উত্তপ্ত চট্টগ্রাম! - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের দুপক্ষের দফায় দফায় সং*ঘর্ষে উত্তপ্ত চট্টগ্রাম! শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি - dainik shiksha শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037240982055664