নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে (এনএসইউ) ‘কর্মশক্তি উন্নয়নে তৃতীয় লিঙ্গের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার এনএসইউয়ের এথিক্স অ্যান্ড ডাইভারসিটি ক্লাবের আয়োজনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার এনএসইউ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেমিনারের লক্ষ্য ছিলো লিঙ্গ সমতা এবং সামাজিক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর্মক্ষেত্রে তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্তির পক্ষে সমর্থনের পাশাপাশি সমাজে এ সম্প্রদায়ের অবদানকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি প্রচার করা।
সেমিনারে এনএসইউ এথিক্স অ্যান্ড ডাইভারসিটি ক্লাবের ফ্যাকাল্টি অ্যাডভাইজার ড. জেরিনা শাবনাজ আক্কাস তৃতীয় লিঙ্গের ক্ষমতায়ন এবং তাদের অধিকারকে সম্মান করে এমন একটি সমাজ গঠনে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রথম প্রধান বক্তা ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের সিএসআর ও কমিউনিকেশন অফিসার সঞ্জীবনী সুধা শৈশবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে তার ব্যক্তিগত সংগ্রাম ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন এবং কোভিড মহামারির সময় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তার বক্তব্যে তৃতীয় লিঙ্গের সম্প্রদায়ের জন্য অন্তর্ভুক্তি এবং সমর্থনের জরুরি প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি উঠে আসে।
ব্লাস্টের জুনিয়র অ্যাডভোকেট অফিসার শোভা সরকার এবং পদ্মকুড়ি হিজড়া সংঘের সাধারণ সম্পাদক মিতু তৃতীয় লিঙ্গকে স্বীকৃতি দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং এ সম্প্রদায়ের জন্য যথাযথ শিক্ষা ও নিরাপত্তা অধিকার সুরক্ষার আহ্বান জানান।
তৃতীয় লিঙ্গের বিষয়ে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনে শিক্ষা ও সামাজিকীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিশেষ অতিথি এনএসইউর ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এমদাদুল হক। তিনি কর্মক্ষেত্রে তৃতীয় লিঙ্গ-বান্ধব নিয়োগ নীতি এবং তৃতীয় লিঙ্গের সম্প্রদায়ের সদস্যদের দ্বারা পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারের বিষয়ে একটি জাতীয় আইনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং কর্মসংস্থানের অধিকারের পক্ষে কথা বলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগকে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের পরামর্শ দেন, যেন তাদের দক্ষতা দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে কাজে লাগানো যায় এবং তা দেশের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখতে সমর্থ হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক ড. এম ইসমাইল হোসেন লিঙ্গ বৈচিত্র্যের আইনগত মাত্রাকে স্বীকৃতি দেয়ার তাৎপর্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সব লিঙ্গ সম্প্রদায়ের জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করে এমন আইন বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন , যা দেশে সামাজিক সমতাকে উৎসাহিত করবে।