ঝালকাঠি সদরের বাসন্ডা এনএস কামিল মাদরাসার নবম শ্রেণির তিন ছাত্রকে বেধড়ক পিটুনি দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক মো. সালাহ উদ্দিন। ওই তিন ছাত্র ক্যাম্পাসের বাইরে ফুটবল খেলতে যাওয়ায় শিক্ষক সালাহ উদ্দিন তাদের ওপর চড়াও হন।
গতকাল সোমবার বিকেলে মাদরাসার আবাসিক তাহেলি ভবনের ২য় তলায় এ ঘটনা ঘটে। রাতেই বিষয়টি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। মঙ্গলবারও বিষয়টি ছিলো ঝালকাঠির টক অব দ্য টাউন।
পিটুনির শিকার ছাত্ররা হলেন- মাদারীপুর সদর উপজেলার মিজানুর রহমানের ছেলে হাবিবুল্লাহ, পটুয়াখালীর ছোট দিঘাই খলিলুর রহমানের ছেলে রুবায়েত ও ভোলা সদর উপজেলার চরনোয়াবাদের মাহমুদ হাসানের ছেলে ইয়াসিন হাসান নাইম। তারা সবাই মাদরাসাটির আবাসিক ছাত্র।
ওই মাদরাসার অন্য ছাত্ররা জানান, গত সোমবার দুপুরে হাবিবুল্লাহ, রুবায়েত ও নাইম ক্যাম্পাসের বাইরে ফুলটবল খেলতে যান। খেলা শেষে তারা ফিরে এলে শিক্ষক মো. সালাহ উদ্দিন তার কক্ষে ডেকে নিয়ে বেত দিয়ে বেধড়ক পিচুনি দেন। পরে ছাত্রদের পিঠে ও হাতে আঘাতের চিহ্নেরব ছবি তুলে কেউ কেউ ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। এতে সারাশহরে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য একাধিকবার কল করা হলেও অভিযুক্ত শিক্ষক ফোন রিসিভ করেননি।
অধ্যক্ষ মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি অফিসিয়াল কাজে ঢাকায় রয়েছি। বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মাদরাসাটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, মাদরাসায় খেলার নিজস্ব খেলার মাঠ রয়েছে। বাইরে খেলতে যাওয়া নিষেধ। ছাত্রশিবির কিংবা স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে যাতে মাদরাসার ছেলেরা মিশতে না পারেন সেজন্যই এমন বিধিনিষেধ করা হয়েছে। তাই হয়তো শিক্ষক শাসন করেছেন। সেটা যদি মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যায় তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে যাদের শাসন করা হয়েছে তাদের কোনো অভিযোগ নেই। একটি পক্ষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টি ছড়িয়ে দিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি রহিত করা সংক্রান্ত নীতিমালা- ২০১১-এর শারীরিক শাস্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে, কোনো ছাত্র-ছাত্রীকে হাত-পা বা কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করা বা বেত্রাঘাত করা যাবে না। এমন অভিযোগে অভিযুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী আইনে কিংবা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ২১ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত ওই পরিপত্রের কথা উল্লেখ করে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জানুয়ারি মণন্ত্রণালয় এই নীতিমালার যথাযথ প্রয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের আবারো নির্দেশনা দেয়।