সম্প্রতি নাসার ওয়েব টেলিস্কোপ ব্যবহার করে বরফে ঢাকা ‘সুপার-আর্থ’ খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা, যা ভিনগ্রহের প্রাণীর আবাসস্থল হতে পারে বলে ধারণা তাদের।
গ্রহটি ‘এলএইচএস ১১৪০ বি’ নামে পরিচিত। গবেষকরা যখন এর প্রথম খোঁজ পেয়েছিলেন, তখন তাদের অনুমান ছিল এটি গ্যাসীয় গ্রহ নেপচুনের খুব ছোট একটি সংস্করণ হতে পারে।
তবে নাসার তথ্য ব্যবহার করে নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রহটিতে বায়ুমণ্ডল এমনকি তরল পানিও থাকার সম্ভাবনা আছে। গবেষকদের দাবি, ভিনগ্রহের প্রাণ সন্ধানে অন্যতম সম্ভাবনার জায়গা হয়ে উঠতে পারে এটি।
গ্রহটি এমন এক কম ভরের লাল বামন তারাকে ঘিরে আবর্তন করছে, যা আকারে আমাদের সূর্যের প্রায় এক পঞ্চমাংশ।
এ বিষয়টি বিজ্ঞানীদের কাছে খুবই রোমাঞ্চকর, কারণ তাদের বিশ্বাস, গ্রহটির অবস্থান সম্ভবত ‘গোল্ডিলকস জোনে’। এটি এমন এক জায়গা, যেখানে গ্রহের অবস্থান এর নিজস্ব তারা থেকে খুব কাছেও না এমনকি দূরেও না। ফলে, এতে তরল পানি জমে থাকার সম্ভাবনা আছে।
প্রচলিত ধারণা হলো, জীবন ধারণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পানি, অন্তত পৃথিবীর বেলায় তা সত্য।
নতুন গ্রহটি সম্পর্কে ইউনিভার্সিতে দে মন্ট্রিয়ল’-এর অধ্যাপক ও এ গবেষণার প্রধান লেখক চার্লস ক্যাডিউ বলেন, পরিচিত সকল নাতিশীতোষ্ণ এক্সোপ্ল্যানেটগুলোর মধ্যে, সৌরজগতের বাইরের কোনও গ্রহে তরল পানি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আমাদের সেরা বাজি হতে পারে ‘এলএইচএস ১১৪০বি’।
তিনি আরো বলেন, সম্ভাব্য বাসযোগ্য এক্সোপ্ল্যানেট অনুসন্ধানে এটি বড় এক মাইলফলক হবে।
গ্রহটিতে সত্যিই পৃথিবীর মতো বায়ুমণ্ডল ও তরল পানি আছে কি না, তা নিশ্চিত করতে গবেষকদের আরও সময় লাগবে। এমনকি নাসার ওয়েব টেলিস্কোপের অভূতপূর্ব সংবেদনশীলতাও এক্ষেত্রে যথেষ্ট নয় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
গবেষকদের আশা, বিষয়টি নিয়ে আরও কাজ করলে গ্রহটিতে কার্বন ডাই অক্সাইডের উপস্থিতি আছে কি না, তা শনাক্ত করা যাবে। আর এর মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যাবে, গ্রহটি বাসযোগ্য কি না।
এই গবেষণার বিস্তারিত উঠে এসেছে ‘ট্রান্সমিশন স্পেকট্রোস্কোপি অফ দ্য হ্যাবিটএবল জোন এক্সোপ্ল্যানেট এলএইচএস ১১৪০ বি উইথ জেডব্লিউএসটি / এনআইআরআইএসএস’ শীর্ষক এক গবেষণাপত্রে, যা শিগগিরই প্রকাশ পাবে ‘অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্স’-এ।