শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণ দেখিয়ে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণরত ২৫২ জন উপপরিদর্শককে (এসআই) অব্যাহতি দেওয়ার পর দুই দফায় নতুন করে ৫৯ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। ‘প্রশিক্ষণ ক্লাসে এলোমেলোভাবে বসে হইচই করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি’র অভিযোগে গত সোমবার ও গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের নোটিশ দেওয়া হয়।
পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিক) তারেক বিন রশিদ স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠিতে সোমবার ১০ জনকে এবং বৃহস্পতিবার ৪৯ জনকে নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশের একটি কপি এসেছে গণমাধ্যমের হাতে। তাতে লেখা রয়েছে গত ৫ নভেম্বর থেকে আপনি ৪০তম ক্যাডেট এসআই/ ২০২৩ ব্যাচের এক বছরের মৌলিক প্রশিক্ষণরত আছেন। গত ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় চেমনি মেমোরিয়াল হলে প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের ‘আইনের গুরুত্বপূর্ন বিভিন্ন ধারার’ উপর ক্লাস ছিলো। ওই ক্লাসে আইন প্রশিক্ষক হিসেবে পুলিশ পরিদর্শক রেজাউল করিম, শেখ শাহীন রাজা উপস্থিত ছিলেন। তারা দেখতে পান সিটে বসার সময় আপনি শৃঙ্খলার সাথে না বসে এলোমেলোভাবে বসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন। পুলিশ পরিদর্শকগণ এসময় বারবার শৃঙ্খলার সাথে বসার নির্দেশ দিলেও আপনি নির্দেশ অমান্য করে হৈচৈ করেছেন। পাঠদানকালে আপনার মনোযোগ ছিলো না। পাশাপাশি বসে কথাবার্তা বলছিলেন। শৃঙ্খলা পরিপন্থী হওয়ায় পুলিশ পরিদর্শক রেজাউল করিম অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এর প্রেক্ষিতে ১৯৪৩ সালের পিআরবি বিধি মোতাবেক আপনাকে কেন চলমান মৌখিক প্রশিক্ষণ হতে অব্যাহতি প্রদান করা হবে না তার লিখিত ব্যাখ্যা ও কৈফিয়ত তলবনামা প্রাপ্তির তিনদিনের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা হলো। আগামী ৪ নভেম্বর এই প্রশিক্ষণ শেষ হবার কথা ছিলো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিঠি পাওয়া একজন এসআই বলেন, ‘পাঠদান কক্ষে কোন বিশৃঙ্খলা হয়নি। ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে আমাদের ৫৯ জনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিতে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আমাদের কেন অব্যাহতি দেওয়অ হচ্ছে তা জানা নেই, তবে দেওয়া হচ্ছে এটাই সত্য।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই। কোন দলের সঙ্গে আমার পরিবারের সম্পর্ক ছিলো না।’
উল্লেখ্য, শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে গত সোমবার ২৫২ জনকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এর আগে গত ২০ অক্টোবর ৬৬ জন শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারের সমাপনী কুচকাওয়াজ হবার কথা থাকলেও হঠাৎ তা স্থগিত করা হয়।