রাজনীতির সুযোগ না থাকলেও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে সক্রিয় রয়েছেন। তাদের কেউ কেউ রাজনৈতিক পরিচয়ে নানা অনৈতিক কাজ ও শিক্ষা প্রশাসনে চাপ সৃষ্টি করেন বলেও অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। এ নিয়ে সমালোচনাও নেহায়েত কম হয়নি। অবশেষে তাদের জন্য আচরণ বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা প্রশাসনের একাধিক সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানিয়েছে, ইতোমধ্যে এ বিধিমালার খসড়া করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য একটি আচরণ বিধিমালা করার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটিটে আয়োজিত এক পর্যালোচনা সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় সংশ্লিষ্টরা নানা সুপারিশ তুলে ধরেন। সার্বিক পর্যালোচনা করে শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।
তবে শিক্ষা প্রশাসনের অপর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সম্প্রতি এক সভায় এমপিভুক্ত শিক্ষকদের আচরণ বিধিমালার খসড়া উপস্থাপন করা হয়। সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের আচরণ বিধিমালাটি করা হচ্ছে। কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনতে কয়েকজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এমপিও শিক্ষকদের আচরণ বিধিমালার খসড়ায় রাজনৈতিক পদ পদবি ধারণ করাকে একটি ‘সামাজিক ধর্তব্য আচরণ’ বা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
দৈনিক আমাদের বার্তার হাতে থাকা ওই খসড়া পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা কোনো রাজনৈতিক দল বা তার অঙ্গ সংগঠন বা সহযোগী সংগঠন বা এফিয়েটেড সংগঠনের সদস্য পদ গ্রহণ করলে তা সামাজিক ধর্তব্য আচরণ হিসেবে গণ্য হবে। এ বিষয়ে অভিযোগ প্রমাণিত হলে পরিচালনা কমিটি ওই শিক্ষককে শাস্তি দিতে পারবে।
আচরণ বিধিমালায় ধর্তব্য আচরণ প্রমাণিত হলে লঘুদণ্ড হিসেবে শিক্ষককে তিরস্কার করা বা নির্দিষ্ট মেয়াদে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা বা এমপিও স্থগিত করা হবে। গুরুদণ্ড হিসেবে এমপিও বাতিল ও চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিবরণী প্রস্তুত করবে। পরে অভিযুক্তকে শোকজ করা হবে। শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হলে কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হবে। তদন্ত কমিটি ওই শিক্ষকের কাছে লিখিত জবাব চাইবে। অভিযোগের প্রমাণ পেলে শিক্ষককে শাস্তি দেয়ার সুপারিশ করবে কমিটি। পরে পরিচালনা কমিটির সভায় দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতিতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। তবে গুরুদণ্ডে দণ্ডিতরা আপিল করার সুযোগ পাবেন।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।