বিংশ শতাব্দীর জার্মান ঔপন্যাসিক এরিখ মারিয়া রেমার্কে এর আজ জন্মদিন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিজের জার্মান সামরিক অভিজ্ঞতার আলোকে রচিত তার অনবদ্য উপন্যাস অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট ছিলো আন্তর্জাতিক সর্বাধিক-বিক্রিত একটি উপন্যাস, যা একটি নতুন সাহিত্যধারার সৃষ্টি করে, এবং পরবর্তীকালে অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়।
এরিখ ১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে জার্মানির অস্নাব্রুক শহরের এক কর্মজীবী রোমান ক্যাথোলিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিটার-আনা দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে রেমার্ক ছিলেন তৃতীয়।
১৬ বছর বয়সে রেমার্ক প্রথম লেখালেখির প্রচেষ্টা শুরু করেন। তার মধ্যে ছিল প্রবন্ধ, কবিতা, এবং একটি উপন্যাসের গোড়ার কিছু অংশ যা পরবর্তীকালে তিনি শেষ করেন এবং ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের দ্য ড্রিম রুম নামে প্রকাশ করেন।
অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট রচিত হয়েছিল ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে। প্রথমদিকে রেমার্ক এর জন্য কোন প্রকাশক খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মান সৈন্যদের অভিজ্ঞতার বর্ণনা ছিলো। প্রকাশের পরপরই এটি আন্তর্জাতিকভাবে সর্বাধিক-বিক্রিত এবং বিংশ শতাব্দীর সাহিত্যকর্মের একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন হিসেবে মর্যাদা পায়। এই গ্রন্থটি প্রবীণ সৈনিকদের যুদ্ধের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখালেখির একটি নতুন ধারা, এবং যুদ্ধের ব্যাপক বৈচিত্র্যপূর্ণ সব স্মৃতিকথার বাণিজ্যিক প্রকাশনাকে উৎসাহিত করে। জার্মানিসহ অন্যান্য দেশ যারা জার্মান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিলো, বিশেষ করে যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশগুলোতে এটি মঞ্চ ও চলচ্চিত্রে যুদ্ধের নাটকীয় উপস্থাপনাকেও উৎসাহিত করে।
রেমার্ক প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী জার্মান অভিজ্ঞতার আলোকে তার লেখালেখি অব্যাহত রাখেন। তার পরবর্তী উপন্যাস থ্রি কমরেডস এর পটভূমি ছিলো ভাইমার প্রজাতন্ত্রের সময়কালে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের অধি-মুদ্রাস্ফীতি থেকে শুরু করে দশকের শেষ অব্দি সময় নিয়ে। তার চতুর্থ উপন্যাস ফ্লোটসাম প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে কলিয়ার’স পত্রিকায়, ইংরেজিতে অনূদিত ধারাবাহিক সংস্করণরূপে।
১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ সেপ্টেম্বর সুইজারল্যান্ডের লোকার্নোতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে এরিখ মারিয়া রেমার্ক মৃত্যুবরণ করেন।