গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা এশিয়ার শীর্ষ ১০০ বিজ্ঞানীর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী ‘এশিয়ান সায়েন্টিস্ট’। এই তালিকায় দুই বাংলাদেশি নারীর নাম এসেছে। তারা হলেন- গাওসিয়া ওয়াহিদুন্নেছা চৌধুরী এবং সেঁজুতি সাহা।
‘দ্য এশিয়ান সায়েন্টিস্ট ১০০’ শিরোনামে রোববার এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। অষ্টমবারের মতো এই তালিকা করা হলো।
জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে হিমবাহ চক্র এবং কাঠামোগত ভূতত্ত্ব অনুসন্ধান, এমনকি মহাকাশ গবেষণার মতো গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা মোকাবিলায় ভূমিকা রাখা গবেষক ও উদ্ভাবকদের এবার বেছে নেওয়া হয়েছে।
গাওসিয়া ওয়াহিদুন্নেছা চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক। তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণিবিদ্যায় (জলভূমি পরিবেশবিদ্যা) বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান ওয়াইল্ডটিমের একজন বোর্ড সদস্য তিনি, যেটি বাংলাদেশের বিলুপ্তপ্রায় প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কাজ করে। গাওসিয়া বাংলাদেশের জলজ বাস্তুতন্ত্র এবং ঝুঁকিপূর্ণ প্রজাতির প্রাণি সংরক্ষণে অবদানের জন্য ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে ওডব্লিওএসডি-এলজাইভার ফাউন্ডেশন পুরস্কার পান। এখন তিনি জলপথে প্লাস্টিক দূষণের ঝুঁকি বিষয়ে কাজ করছেন বলে এশিয়ান সায়েন্টিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সেঁজুতি সাহা একজন অণুজীববিজ্ঞানী। জীববিজ্ঞানে বিশেষ অবদান রাখার জন্য এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন তিনি। আণবিক জিনতত্ত্বের এই গবেষক কাজ করছেন বাংলাদেশের চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনে (সিএইচআরএফ)। সেঁজুতি সাহা ও তার প্রতিষ্ঠান সিএইচআরএফ বাংলাদেশের রোগীদের নমুনা থেকে নতুন করোনা ভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জিনোম বিন্যাস উন্মোচন করে।
শিশুদের আক্রান্ত করে এমন কিছু রোগ, যেমন ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়া নিয়ে তিনি গবেষণা করেন। তিনি বিশ্বে প্রথম দেখান যে, চিকুনগুনিয়া ভাইরাস শিশুদের মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এবং শিশুর মেনিনজাইটিস রোগ হতে পারে।
তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল পোলিও ইরেডিকেশন ইনিশিয়েটিভের বোর্ড মেম্বার পদে নিযুক্ত হন।
‘এশিয়ান সায়েন্টিস্ট’ ওয়েবসাইটে বিজ্ঞানীদের পরিচয় এবং তাদের গবেষণার বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে। এতে দেখা গেছে, বাংলাদেশ ছাড়াও চীন, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, হংকং, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের বিজ্ঞানী ওই ১০০ জনের তালিকায় রয়েছেন।