পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে সিলেটের একটি কেন্দ্রে অনৈতিকভাবে এসএসসির উত্তরপত্র এবং ওএমআর শিট পূরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
যে কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটেছে সেটি হলো, গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি উপজেলার অন্যতম পরীক্ষা কেন্দ্র। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেন পার্শ্ববর্তী হাজী সোহরাব আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। পরীক্ষা শেষে তাদের খাতা মূল কেন্দ্র তথা আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পৌঁছে দেয়ার পর ওই প্রতিষ্ঠানের দুজন খণ্ডকালীন শিক্ষক উত্তরপত্র পূরণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ওই ঘটনার ভিডিওচিত্রের বরাত দিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, পরীক্ষা শেষে আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে কিছু শিক্ষার্থীকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। অফিসে একাধিক শিক্ষার্থীকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। এক ছাত্রকে রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিয়ে বাবু স্যারের সঙ্গে দেখা করতে বলেন এক শিক্ষক। দুই শিক্ষক বৃত্তভরাট করছেন। এক ছাত্রীকে বিভাগ জিজ্ঞাসা করছেন এক শিক্ষক। আরেক ছাত্রকে কেউ একজন ধমক দিচ্ছেন। ওএমআর শিট ঠিক করে রাখতে দেখা গেছে একজনকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যেক কেন্দ্রের খাতা ঠিক সময়ে পৌঁছে দেয়া হলেও আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের খাতা দেরিতে পোস্ট অফিসে পৌঁছে দেয়া হয়। এ থেকে সন্দেহ হওয়ার পর গোপনে কে বা কারা কেন্দ্রে অবস্থান নিয়ে ভিডিও ধারণ করে। ওইসব ভিডিও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্নজনের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। গত রোববার রাতে ভিডিও প্রকাশ পেলে তোলপাড় শুরু হয়।
এ বিষয়ে জাফলং আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এইচ এম মনিরুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। এখন কিছু বলা যাচ্ছে না।
গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান বলেন, ভিডিও ক্লিপ পাওয়ার পর রোববার রাতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক সত্যতা পাই। তাৎক্ষণিকভাবে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) আহ্বায়ক এবং উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে সদস্য করে গঠিত কমিটি তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবেন। তদন্ত প্রতিবেদনের পর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, সীমান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাট শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে। আমরা চেষ্টা করছি এগিয়ে নেয়ার। শিক্ষকদের এমন কাজের সত্যতা পাওয়া গেলে তা খুবই মর্মান্তিক হবে।