কওমি শিক্ষার্থীদের মূল ধারায় নিয়ে আসার তাগিদ - দৈনিকশিক্ষা

নতুন শিক্ষক্রম নিয়ে মতবিনিময়কওমি শিক্ষার্থীদের মূল ধারায় নিয়ে আসার তাগিদ

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিক্ষায় নতুন প্রজন্মকে শিক্ষিত করতে পুরনো শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজিয়ে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন শুরু করেছে সরকার। প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার্থী এর সুফল পাবেন বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে দেশের শিশুদের একটি বড় অংশ কওমি মাদরাসায় পড়ছে। বিপুলসংখ্যক শিশু শিক্ষার্থীকে নতুন শিক্ষাক্রমের মূলধারার নিয়ে আসার তাগিদ জানিয়েছেন সাংবাদিক, সংসদ সদস্য ও শিক্ষাবিদরা। কারো কারো মতে, এ বিপুল শিক্ষার্থীর উৎপাদনশীলতাকে কাজে লাগাতে না পারলে কোনো এক সময় তারা দেশের বোঝা হয়ে যেতে পারেন। তাই নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে কওমি শিক্ষার্থীদের মূল ধারায় নিয়ে আসার তাগিদ দিয়েছেন তারা।

একইসঙ্গে নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা শিক্ষা দেয়া, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস শিক্ষার্থীদের জানানো, ব্লেন্ডেড এডুকেশন বাস্তবায়ন, শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো, শিক্ষকতা পেশাকে আকৃষ্ট করাসহ নানা প্রস্তাবনা সামনে আসে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক, শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্টজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। ওই সভায় কওমি শিক্ষার্থীদের মূল ধারায় নিয়ে আসার তাগিদ দেন সিনিয়র সাংবাদিক ও বিশিষ্টজনরা।

মতবিনিময়ে সিনিয়র সাংবাদিক রাশেদ আহমেদ বলেন, কুদরত-ই-খুদা কমিশনের শিক্ষা ব্যবস্থার সুপারিশের মধ্যে একটি বিষয় ছিলো নৈতিকতা শিক্ষা। নতুন শিক্ষাক্রমে নৈতিকতার একটি সাবজেক্ট যেনো রাখা হয়। আমাদের মূল্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে। দেশে অনেক উন্নয়ন হলে মনেও উন্নয়ন কম হচ্ছে। একজন বৃদ্ধ লোক যদি বাসে উঠতে না পারেন আরেকজন কিন্তু তাকে সাহায্য করেন না। 

তিনি আরো বলেন, আমাদের বহুমুখী শিক্ষা ব্যবস্থায় মাদরাসা শিক্ষা, ইংরেজি মিডিয়াম চলছে। তবে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ কওমি মাদরাসায়। ২৫ থেকে ৩০ লাখ শিক্ষার্থী কওমি মাদরাসায় আছেন। আমি বলবো না তারা কী শিখছেন, তবে তাদের উৎপাদনশীলতা দেশের কতোটা কাজে লাগছে সেটা ভেবে দেখতে বলবো। যদি তাদের বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার মধ্যে নিয়ে আসা না যায়, মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসা না যায় তাহলে কোনো না কোনো সময়ে এটি বড় একটি বোঝা হয়ে যেতে পারে আমাদের দেশে। 
সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক মেরিনা জাহান কবিতা বলেন, কওমি মাদরাসায় ঢুকলে মনে হয় অন্য রাষ্ট্রে চলে এসেছি। তারা মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর কথা জানেনা। তারা এখনো বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার বাইরে আছেন। দেশের মোট শিক্ষার্থীদের একটি অংশ কওমি মাদরাসায় অধ্যয়নরত। তাদের বাদ রেখে পুরো জাতিকে এগিয়ে নেয়া যাবে না।

মতবিনিয়ম সভায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান। শিক্ষকতায় মেধাবীদের আকৃষ্ট করতে প্রাইমারি মাদরাসাসহ উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত সর্বস্তরের শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রণয়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। একইসঙ্গে ব্লেন্ডেড শিক্ষার মাস্টারপ্ল্যান চূড়ান্ত করতেসরকারের প্রতি আহ্বান জানান। 
সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, বর্তমানে শিক্ষকতা পেশায় মেধাবীরা আগ্রহ হারাচ্ছে। যারা শিক্ষকতা পেশায় থাকতে চাচ্ছেন না। অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছেন। এ সংকট কাটানোর তাগিদ জানান তিনি। 

কওমি মাদরাসা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, কওমি মাদরাসায় এখনো আমরা (নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে) প্রবেশ করতে পারিনি। তবে আমরা আশা করি নতুন শিক্ষাক্রম ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা নিয়ে আমরা সেখানে প্রবেশ করতে পারবো। ধীরে ধীরে কওমি মাদরাসাকে মূলধারার শিক্ষায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে। 

মন্ত্রী আরো বলেন, এ একটি জায়গায় আমরা তাদেরকে এখনো আনতে পারিনি। তাদের কর্মশীলতা নিয়ে, অন্যান্য দক্ষতা নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। তাদের মূল স্রোতে নিয়ে আসা খুব জরুরি। আমরা যে জায়গাটাতে আমরা এখনো পৌঁছাতে পারিনি।

ব্লেন্ডেড এডুকেশন মাস্টার প্ল্যান নিয়ে মন্ত্রী বলেন, এটি আমরা প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। হয়তো আর একটি সভা প্রয়োজন হবে পুরোপুরি চূড়ান্ত করতে।

মন্ত্রী আরো বলেন, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট এ বছরের মধ্যে হওয়ার কথা ছিলো। তবে তা সম্ভব হয়নি। আগামী বছরের মধ্যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইন্টারনেট সংযোগের আওতায় চলে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। 

শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো নিয়ে মন্ত্রী বলেন, শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো- এ জায়গাটাতে আমরা এখনো এগুতে পারিনি। এ জায়গাটাতে হয়তো কাজ করবার প্রয়োজন আছে।

 

 

চট্টগ্রামে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২ - dainik shiksha চট্টগ্রামে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২ ঢামেকে একজনের মৃত্যু - dainik shiksha ঢামেকে একজনের মৃত্যু জবির কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ৪ - dainik shiksha জবির কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ৪ বেরোবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০০ - dainik shiksha বেরোবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০০ শহীদ মিনার এলাকায় অধ্যাপককে মারধর - dainik shiksha শহীদ মিনার এলাকায় অধ্যাপককে মারধর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে : কাদের - dainik shiksha সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে : কাদের সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই: ঢাবি উপাচার্য - dainik shiksha সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই: ঢাবি উপাচার্য যারা নিজেদের রাজাকার বলেছে তাদের শেষ দেখে ছাড়বো - dainik shiksha যারা নিজেদের রাজাকার বলেছে তাদের শেষ দেখে ছাড়বো সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ - dainik shiksha সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে - dainik shiksha র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030021667480469