দৈনিক শিক্ষাডটকম, ফরিদপুর : ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে গভীর নলকূপ স্থাপনার কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে পাপ্পু এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীর বিরুদ্ধে। পরে গভীর রাতে কলেজটির শিক্ষার্থীদের বাঁধায় কাজ বন্ধ রাখলেও পুনরায় কাজ করার চেষ্টার অভিযোগ তুলছে শিক্ষার্থীরা।
গতকাল শুক্রবার রাত ২টার দিকে গভীর নলকূপ স্থাপনে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. পাপ্পুকে বাঁধা দেন শিক্ষার্থীরা।
পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় ঠিকাদারের। একপর্যায়ে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হন ঠিকাদার। অভিযোগ উঠা মো. পাপ্পু ফরিদপুর পৌরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ছিলেন।
কলেজটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সুপেয় পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর মেসার্স পাপ্পু এন্টারপ্রাইজ নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একটি গভীর টিউবওয়েল নির্মাণের কার্যাদেশ দেন। কার্যাদেশ অনুযায়ী টিউবওয়েল বোরিংয়ের গভীরতা ১৪০০ ফিট হওয়ার কথা। কিন্তু ঠিকাদার ৯২০ ফিট গভীরতায় রাতের অন্ধকারে টিউবয়েল স্থাপন করতে গেলে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা বাঁধা প্রদান করেন। পরে ঠিকাদারের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। বাগবিতণ্ডার সময় ঠিকাদার স্থানীয় জেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা ছাত্রলীগের নাম বলে হুমকি প্রদান করে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান ও সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহামেদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
তবে অভিযোগের ব্যাপারে মেসার্স পাপ্পু এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকার মো. পাপ্পু বলেন, আমার কার্যাদেশ অনুযায়ী টিউবওয়েল বোরিং এর গভীরতা ১৪০০ ফিট হওয়ার কথা থাকলেও ৯৯০ ফিটের কিছুটা বেশি যাওয়ার পর পাইপ ভেঙে যায়। তবে, সেখান থেকে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া সম্ভব। সেটা কর্তৃপক্ষ মেনেছেও। আমার সঙ্গে শুধু শুধু ঝামেলা করছেন তারা।
পাপ্পু আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমার কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। এখন পুনরায় কাজ করতে গেলে আমার লোকসান হবে। তবে, কলেজটির কর্তৃপক্ষ আমাকে পুনঃস্থাপনের কথা বলছে। তবে, পুনঃস্থাপনের সে টাকা কেউ দিতে চাচ্ছেন না।
জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের পরিচয় দিয়ে হুমকি ধামকি দেওয়ার অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে পাপ্পু বলেন, আমি তাদের এ পরিচয়ে কোনো হুমকি ধামকি দেইনি। এটা মিথ্যা অভিযোগ।
কলেজটির অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বলেন, নিয়মানুসারে কাজ না হলে আমি বিলে স্বাক্ষর করবো না। আমি বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বিষয়টি দেখতে বলেছি।
জেলা শিক্ষা ও প্রকৌশলী অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম বলেন, আমরা কাজটি আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছি। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা ও প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আফজাল হোসেন বলেন, ৯৯০ ফিট যাওয়ার পর পাইপ ফেঁটে গিয়েছে বলে শুনেছি। তবে, সেখানে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া সম্ভব কি-না সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হবে। মোট তিন জায়গায় এ পানি পরীক্ষা করা হবে, তারপর সিদ্ধান্ত। আমরা আপাতত কাজ বন্ধ রেখেছি। পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।