প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় কোনো কাজেই আসছে না স্থানীয়দের। সেতু নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার সাত মাসেও নির্মাণ হয়নি সংযোগ সড়ক। একপাশে মই দিয়ে সেতুতে উঠে ফের মই দিয়ে অপর পাশে সেতু থেকে নামতে হয়।
ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার রাজগাতি ইউনিয়নের কালীগঞ্জ বাজারের পাশে নরসুন্দা নদীর ওপর এই সেতুটি। বর্তমানে নবনির্মিত সেতুটি জনগণের কোনো কাজে আসছে না। দুই পাড়ের লোকজন বাঁশের চওড়া মই লাগিয়ে সেতুটি পার হচ্ছেন। মই বেয়ে কয়েক গ্রামের মানুষ এই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৭ জুন সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে। ৯৬ মিটার লম্বা সেতুর নির্মাণ ব্যয় ৭ কোটি ৪১ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হলেও হয়নি সংযোগ সড়ক। তবে সেতু নির্মাণের পর সংযোগ সড়কের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা এলজিইডি কার্যালয়।
সেতু নির্মাণের আগে দুই পাড়ের লোকজন শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো ও বর্ষায় নৌকা দিয়ে নদী পারাপার হতো। এতে বেশ কয়েকবার নৌকাডুবির ঘটনাও ঘটেছে।
সেতুর পশ্চিম পাশে রয়েছে ওই এলাকার প্রধান ব্যবসা কেন্দ্র কালীগঞ্জ বাজার, অগ্রণী ব্যাংকের শাখা ও বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর পূর্ব পাড়ে রয়েছে প্রায় আট-দশটি গ্রামের হাজারো বাসিন্দার বসবাস। ফলে সেতুটির ব্যাপক প্রয়োজনীতা ছিল। এটি নির্মাণ হওয়ায় দুই এলাকার মধ্যে সহজ যোগাযোগ স্থাপিত হয়। কিন্তু এখনও সংযোগ সড়ক না থাকায় তা আর কোনো উপকারেই আসছে না।
পূর্বপাড়ের নগদাপাড়া গ্রামের হাসেন আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, নৌযান চলাচল করার জন্য এই সেতুটি উঁচু করে বানানো হয়েছে। নরসুন্দার নৌপথ ব্যবহার করে সিলেটের তাহিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বড় বড় নৌযানে করে তারের ঘাট বন্দরে পাথর আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। নৌপথ টিকিয়ে রাখতে সড়ক পথ থেকে সেতুটির উচ্চতা প্রায় দশ-বারো ফুটের বেশি। সেতুটির পশ্চিম প্রান্ত পড়েছে কালীগঞ্জ বাজার ঘেঁষে। পূর্ব প্রান্ত পড়েছে নগদা পাড়া গ্রামের জনবসতির ভেতরে।
স্থানীয় আইন উদ্দিন নামের এক বৃদ্ধ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আগে প্রয়োজন হলে কোনোমতে নৌকা দিয়ে হলেও বাজারে যেতে পারতাম। এখন সেতু হয়েছে কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় মই বেয়ে সেতুতে উঠতে হয়। বয়স হয়েছে তাই মই বেয়ে সেতুতে উঠতেও পারি না। বাজারেও যাওয়া হয় না।
সেতুর ঠিকাদার মো. আবদুল গণি ভূঁইয়া দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মূল সেতু নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এখন সংযোগ সড়ক নির্মাণ হলে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। এজন্য পরিকল্পনা চলছে।
জানতে চাইলে জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সেতু নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। তবে সেতু নির্মাণের পর অ্যাপ্রোচ সড়কের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের আবেদন করা হয়ছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে।