কারাগারে পাঠানো হয়েছে আদিলুর রহমান খান শুভ্র ও এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানকে। দুই বছরের কারাদণ্ড ঘোষণার পরপরই তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয় বলে পিসি শামীম আহমেদ দৈনিক আমাদের বার্তাকে নিশ্চিত করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ এর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান খান শুভ্র ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। ১০ বছর আগে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে অভিযান নিয়ে তথ্য বিকৃতির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এ রায় দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের কারাদণ্ড হবে। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে রায় ঘোষণা করেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত।
২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম সমাবেশ করে। পরে সমাবেশস্থলে রাতযাপনের ঘোষণা দেন সংগঠনের নেতারা। তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে যৌথ অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওই অভিযানে ৬১ জন নিহত হন বলে দাবি করেছিল ‘অধিকার’। সরকারের ভাষ্য, সেই রাতের অভিযানে কেউ মারা যায়নি।
কারাগারে নেওয়ার আগে প্রিজনভ্যানে তোলার সময় আদিলুর রহমান খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ন্যায়বিচার পাইনি। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।’
আরো পড়ুন : অধিকারের আদিলুর-এলানের ২ বছরের কারাদণ্ড
শাপলা চত্বরে অভিযানের পর ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ১০ আগস্ট গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে ডিবি পুলিশ। তদন্ত শেষে ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার আদালতে আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এতে ৩২ জনকে সাক্ষী করা হয়। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মামলাটি বিচারের জন্য অভিযোগ আমলে নেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘আসামি আদিলুর ও এলান ৬১ জনের মৃত্যুর বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা’ তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি ও প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভের সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নের অপচেষ্টা চালায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি দেশে-বিদেশে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করে।’
আরো বলা হয়, ‘তারা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি করে যা তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ (১) ও (২) ধারায় অপরাধ। একইভাবে ওই আসামিরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা চালায় এবং সরকারকে অন্য রাষ্ট্রের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালায়।’