গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ১৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে। শুধু কোমলমতি শিশুরাই নয়, বড় ধরনের দুর্ঘটনার আতঙ্কে আছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরাও। অতিদ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবন সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের মাধ্যমে শঙ্কামুক্ত সুন্দর শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি স্থানীয়দের।
এলাকাবাসী, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশের মতো কালিয়াকৈর উপজেলাতেও ব্যাপক উন্নয়ন করেছে বর্তমান সরকার। এর ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হকের হস্তক্ষেপে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় নতুন নতুন ভবনসহ সুন্দর শিক্ষা পরিবেশ সৃষ্টি করেছে উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা অফিস। অথচ এ উপজেলার ১২২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে এখনো ১৩টি স্কুল জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। এগুলো হচ্ছে কালিয়াকৈর, নয়াপাড়া, কাচিঘাটা, ডাইনকিনি, গলাচিপা, বড়ইছুটি, উত্তর দাড়িয়াপুর, বাঁশতলী, সিনাবহ, আকুলিচালা, তালতলী, মুরাদপুর ও সাহেবাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এসব স্কুলের ভবনের পিলার ও ছাদের পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। অনেক সময় কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ওপর পলেস্তারার বিভিন্ন অংশ পড়ে। এছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষের দেয়ালেও রয়েছে ছোট-বড় ফাটল। পলেস্তারা খসে পড়ে বই-পুস্তক, কলম-খাতা ও স্কুলব্যাগও নষ্ট হচ্ছে। নোংরা হচ্ছে শ্রেণিকক্ষের শিক্ষা পরিবেশও। সব মিলিয়ে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এসব স্কুলের ভবনগুলো। আর এসব জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ স্কুলের ভবনেই আতঙ্কের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের চলছে পাঠদান। এ কারণে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রমও। এছাড়াও পাঠদানের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় স্কুলে পাঠিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন অভিভাবকরা। কারণ, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী অনিক সাহা, সামিয়া আক্তার, তাসলিমা, অর্জুন সরকারসহ অনেকেই বলেন, স্কুলের ভবন খুব ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক সময় আমাদের ওপর ছাদ থেকে বালু, পাথর, সিমেন্ট খসে পড়ে। এজন্য আমরাও খুব আতঙ্কে থাকি। সরকার যদি তাড়াতাড়ি মেরামত করে দিত, তাহলে আমাদের লেখাপড়া আরও ভালো হতো।
শুধু শিশু শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরাই নয়, অতিদ্রুত জরাজীর্ণ-ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবন সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের মাধ্যমে শঙ্কামুক্ত সুন্দর শিক্ষা পরিবেশের দাবি জানিয়েছেন অভিভাবক ও স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহেদা আখতার বলেন, নতুন ভবনের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। স্যারও এটার জন্য ডিও লেটার প্রদান করেছেন। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি এই সমস্যার সমাধান হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, ইতিমধ্যেই স্কুলের জরাজীর্ণ-ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেগুলো অনুমোদন হলেই অতিদ্রুত বিধি মোতাবেক টেন্ডারের মাধ্যমে কাজগুলো সমাধান করা হবে।