শিক্ষার্থী নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের (কুমেক) ১০ ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনকে আজীবনের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মির্জ্জা মুহাম্মদ তাইয়েবুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। শাস্তির আওতায় নেওয়া ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী-সমর্থক বলে কলেজ সূত্র জানিয়েছে।
কলেজের অধ্যক্ষ মির্জ্জা মুহাম্মদ তাইয়েবুল ইসলাম বলেন, গত সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই দিনই ১০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
গত সোমবার কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত শিক্ষার্থীদের শাস্তিবিষয়ক এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গত ২২ ফেব্রুয়ারি এবং ৯ মার্চ কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে ঘটিত অপ্রীতিকর ঘটনা জড়িত ছাত্রদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি অনুমোদিত হয়। এই শাস্তি অবিলম্বে কার্যকর হবে।
শাস্তি পাওয়া ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা হলেন- কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের ২৫তম ব্যাচের হৃদয় রঞ্জন নাথ ও আনোয়ার হোসেন, ২৭তম ব্যাচের শহিদুল ইসলাম, জয় সরকার ও সামিউল হক, ২৮তম ব্যাচের শাইখ আবেদিন, তালুকদার মো. ফারহান ও তাহসিনুল হক, ৩০তম ব্যাচের আফ্রিদি ইসলাম এবং ৩১তম ব্যাচের ইয়াসির জোনায়েদ।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টায় মেডিক্যাল কলেজ গেটে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হৃদয় রঞ্জন নাথের নেতৃত্বে ২৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুজাহিদ ত্বহাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। সেই সঙ্গে আরেক শিক্ষার্থী আবদুল মান্নানকেও হেনস্তা করা হয়। পরে তাদের শিবিরের নেতা-কর্মী বলে পুলিশে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। এ ঘটনার পর ৩ মার্চ আবদুল মান্নানের মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে হাতবোমা দিয়ে মান্নানকে বিস্ফোরক মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। মোটরসাইকেল ফেরত দেওয়ার জন্য তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদাও দাবি করা হয়। এছাড়া ৯ মার্চ কলেজ ক্যাম্পাসে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আছে শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকায় দীর্ঘদিন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘটনার প্রায় ১০ মাস পর তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।