দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: ইলেকট্রিক কেটলি থেকে রাজধানীর নিউ বেইলি রোডের ‘গ্রিন কোজি কটেজ’ নামের ভবনে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল । লিকেজ থেকে ছড়ানো গ্যাসের কারণে মুহূর্তের মধ্যে পুরো ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তদন্ত শেষে ফায়ার সার্ভিস এসব তথ্য জানিয়েছে।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে বেইলি রোডের আটতলা ভবনে আগুন লাগে। ভবনের বিভিন্ন তলায় রেস্তোরাঁ ও কফিশপ। ওই রাতে বিপুলসংখ্যক মানুষ সেসব প্রতিষ্ঠানে খাওয়ার উদ্দেশে গিয়েছিলেন। ফায়ার সার্ভিস বলছে, প্রথমে কেটলির শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে। ভবনের একটিমাত্র সিঁড়ি যাতে সিলিন্ডার রাখা ছিল। যে কারণে মানুষ নামতে পারেনি। আগুনে ৪৬ জন প্রাণ হারান।
অগ্নিকাণ্ডের পর ফায়ার সার্ভিস পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছিল। এ ছাড়া আরও একাধিক সংস্থা তদন্ত কমিটি করে। কমিটিগুলোর মধ্যে ফায়ার সার্ভিস নির্ধারিত সময়ে তদন্ত শেষ করে গত সপ্তাহে নিজেদের অধিদপ্তরে প্রতিবেদন জমা দেয়।
ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, ভবনটির নিচতলায় ‘চা চুমুক’ নামের একটি কফিশপের কেটলির শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে। আগে থেকেই সেখানে লিকেজের কারণে গ্যাস জমা হয়ে ছিল। এ কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। শুধু শর্ট সার্কিট বা বৈদ্যুতিক সমস্যা থেকে আগুন ধরলে এত দ্রুত ছড়ায় না বা আগুন এত বড় আকার ধারণ করে না। আগুনের প্রাথমিক অবস্থার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ এবং পর্যালোচনা করে তদন্ত কমিটি দেখতে পায়, ৪-৫ মিনিটের মধ্যে আগুন অতিমাত্রায় জ্বলতে থাকে। বৈদ্যুতিক উৎস থেকে লাগার পর আগুনটা গ্যাসে ছড়িয়েছে। প্রথম পর্যায়ে লোকজন এক্সটিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু জমে থাকা গ্যাসের কারণে তারা ব্যর্থ হন। ৬ মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম গাড়ি যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, ততক্ষণে নিচতলা আগুনে ব্লক হয়ে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা আক্ষেপ করে বলেন, যদি খালি একটি সিঁড়ি থাকত, তাহলে এত মানুষ মারা যেত না। একটিমাত্র সিঁড়ি রয়েছে, তাও সেটি গ্যাস সিলিন্ডার রেখে ব্লক করে রাখা হয়েছিল। এমন অন্তত ১৩ ব্যত্যয় ছিল ভবনটিতে। এর মধ্যে কয়েকটি গুরুতর। ভবনে যে সংখ্যক লোক যাতায়াত করে সে তুলনায় অন্তত দুটি সিঁড়ি থাকা আবশ্যক ছিল। ভবনের কাঠামোগত পরিবর্তন করতে গিয়ে আরেকটি ‘গুরুতর ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে’।