কোটা পদ্ধতি নিয়ে কেন বিতর্ক - দৈনিকশিক্ষা

কোটা পদ্ধতি নিয়ে কেন বিতর্ক

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

দেশে প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোনো ধরনের কোটা থাকবে না বলে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ও ওই বছরের ৪ অক্টোবর এ-সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছিল। ফলে তখন সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে (নবম থেকে ১৩তম গ্রেড) কোটা বাতিল হয়। কিন্তু সম্প্রতি কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাই কোর্ট। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে সারা দেশের চাকরিপ্রার্থী তরুণ-তরুণী এবং শিক্ষার্থীরা। কারণ চাকরিপ্রার্থীরা মনে করেন আবারও কোটা পদ্ধতি চালু হলে ৫৬ শতাংশ চাকরিই চলে যাবে কোটায়, ক্ষতিগ্রস্ত হবে মেধাবীরা। শনিবার (৬ জুলাই) বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন আকতারুজ্জামান।

চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে অনগ্রসর শ্রেণিকে সুবিধা দিয়ে সমতা বিধানের লক্ষ্যে কোটার প্রবর্তন করা হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে এসে এসব কোটার কোনো যৌক্তিকতা নেই। তাই সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা। জানা গেছে, কোটা চালু হলে চাকরির ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ জেলা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা ও শর্তসাপেক্ষে ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটাসহ মোট ৫৬ শতাংশই এই খাতে চলে যাবে। চাকরিপ্রার্থী তরুণ-তরুণীদের অভিমত, সরকারি? চাকরির জন্য যে দেশে লাখ লাখ ছেলেমেয়ে লড়াই করে, লিখিত, মৌখিক সব উত্তীর্ণ হয়েও পদ কম বলে চাকরি না পেয়ে আহাজারি করে, সেই?দেশে চাকরিতে কোটায় এত বেশি নিয়োগ মেনে নেওয়া যায় না। তারা বলছেন, ৫৬ শতাংশ কোটা থাকাকালে অনেক পদে কোটাধারী আবেদনকারী না পাওয়ায় পদ শূন্য থাকত। তাই বর্তমানেও কোটার কোনো যৌক্তিকতা নেই। 

তথ্যমতে, গত ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা বিদ্যমান থাকায় মেধায় নিয়োগ দেওয়া হতো ৪৪ শতাংশ। অর্থাৎ মেধার চেয়েও কোটায় নিয়োগ দেওয়া হতো বেশি। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি থেকে কোটা পদ্ধতির সংস্কার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’র ব্যানারে চাকরিপ্রার্থী তরুণ-তরুণীসহ শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ আট মাস থেমে থেমে আন্দোলন চলার পর একই বছরের অক্টোবরে দেশে প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোনো ধরনের কোটাই থাকবে না বলে সরকার ঘোষণা দেয় সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করে। ফলে সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা বাতিল হয়। কিন্তু ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে হাই কোর্টে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। গত ৫ জুন সেই আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ কোটাপদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। পরে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। তবে শুনানিতে সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে (নবম থেকে ১৩তম গ্রেড) সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত হয়নি। এর ফলে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে।

কোটাবিরোধী আন্দোলনে ঢাবি সাদা দলের সংহতি :  সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে জারিকৃত সরকারি পরিপত্রের অংশবিশেষ অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিএনপি জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান এবং যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান ও অধ্যাপক আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব জানানো হয়। বৃহস্পতিবার দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের জারিকৃত সরকারি পরিপত্রের অংশবিশেষ অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে কোটাব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের চলমান আন্দোলনের প্রতি আমরা সমর্থন জানাচ্ছি। অবিলম্বে তাদের চার দফা দাবি পূরণের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবি বিপিসি ও বাকশিস‘র - dainik shiksha শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবি বিপিসি ও বাকশিস‘র শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ ঘোষণার প্রতিশ্রুতি আসছে! - dainik shiksha শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ ঘোষণার প্রতিশ্রুতি আসছে! ‘আমরা রক্ত দিচ্ছি আর ওরা সচিবালয়ে বসে টাকা ভাগ করছে’ - dainik shiksha ‘আমরা রক্ত দিচ্ছি আর ওরা সচিবালয়ে বসে টাকা ভাগ করছে’ ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত ভর্তি কাল, ক্লাস শুরু ২০ অক্টোবর - dainik shiksha ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত ভর্তি কাল, ক্লাস শুরু ২০ অক্টোবর অবশেষে ইএফটিতে এমপিও শিক্ষকদের বেতন দেওয়া শুরু - dainik shiksha অবশেষে ইএফটিতে এমপিও শিক্ষকদের বেতন দেওয়া শুরু দুই শতাধিক জাল শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ - dainik shiksha দুই শতাধিক জাল শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0063128471374512