সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেলে ঢাকা কলেজের মূল ফটকের সামনে জড়ো হন তারা। পরে স্লোগান দিয়ে মিছিল নিয়ে মিরপুর সড়কের সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় ঘুরে নীলক্ষেত হয়ে আবার কলেজের গেটের সামনে আসেন তারা।
এসময় শিক্ষার্থীদের ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘কোটা নয়, মেধা চাই’, ‘চাকরি পেতে, স্বচ্ছ নিয়োগ চাই’, ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘এই বাংলায় হবে না, বৈষম্যের ঠিকানা’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘এসো ভাই এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়।
বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে। এই দাবি সারা বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের। কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে কিছু নির্দিষ্ট শ্রেণির মানুষকে চাকরিতে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এই ব্যবস্থা যোগ্যতাভিত্তিক নিয়োগের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। কোটা প্রথা সমাজের সাধারণ প্রার্থীদের প্রতি অসমতা তৈরি করে।
বিষয়টি নিয়ে ঢাকা কলেজের স্নাতকোত্তর শ্রেণীর শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, বৈষম্যমুক্ত মেধাবীদের বাংলাদেশ চাই। সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবি সব সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দেও কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হয়েছে। এটি একটি অসম বিন্যাস। সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে। আমরা কোটা ব্যবস্থা পুরোপুরি বাতিলের পক্ষে দাবি জানাই। এই ইস্যুতে সারা দেশের শিক্ষার্থীরাই অসন্তুষ্ট। আমরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করবো।
এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সাম্যের পরিপন্থি এবং এটি যোগ্য প্রার্থীদের জন্য অবিচার সৃষ্টি করছে। আমরা চাই এই ব্যবস্থা বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা হোক।
আফজাল হোসেন নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করতে হবে। এই ব্যবস্থার ফলে মেধার মূল্যায়ন হচ্ছে না। আমরা মনে করি, কোটা পদ্ধতি মেধাবী প্রার্থীদের প্রতি অবিচার করছে। সেজন্য দাবি জানাই, সরকারি চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে হোক, যাতে যোগ্যতম প্রার্থীরা চাকরি পায়।
রায়হান উদ্দিন নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, সংবিধানের মূল কথা হচ্ছে সবার সমান অধিকার। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে একটি অসম প্রতিযোগিতায় নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোটা ব্যবস্থা অনেক সময় কম যোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ দেয়, যা সমান প্রতিযোগিতার নীতির বিরোধী। এর ফলে মেধাবী প্রার্থীরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে। আবার কোটা পদ্ধতি কিছু নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে সুবিধা দিচ্ছে। এভাবে বৈষম্য দূর না হয়ে বরং বেড়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, দেশের উন্নয়নের জন্য সর্বোচ্চ মেধাবী ও যোগ্য ব্যক্তিরাই সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত হোক।
এছাড়া কোটা পদ্ধতি শিগগিরই স্থায়ীভাবে বাতিল ঘোষণা না করলে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে সম্মিলিত আন্দোলনের নামার হুঁশিয়ারিও দেন তারা।