খাবারের দাম সহনীয় পর্যায়ে হল প্রশাসন রাখতে বললেও, তা তোয়াক্কা না করে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সেহরির প্রত্যেক খাবারের ২০-৩০ টাকা বাড়ানো হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টার দা’ সূর্য সেন হলে। যার ফলে শিক্ষার্থীর মনে চাপা ক্ষোভের জন্ম নিয়েছে। তবে হল প্রশাসন বলছে দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাওয়া হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত-রাতে সেহরিতে দেখা গেছে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য হলের খাবারে ১০-১৫ টাকা বাড়ানো হলেও সূর্য হলে তা দ্বিগুণ নাম নেয়া হয়েছে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। তবে ক্যান্টিন মালিকের দাবি অন্য হলগুলোর তুলনায় খাবারের মান ভালো ছিলো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার দা’ সূর্য সেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, খাবারের মান পরিবর্তন না করে খাবারের দাম ২৫-৩০ শতাংশ করে বাড়ানো হয়েছে। রোজার আগের রাতে যে খাবার ছিল ৪০-৪৫ টাকা করে সেগুলো সেহরিতে বিক্রি করছে ৭০-৮০ টাকা করে। একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর একবেলা সেহেরি খেতে কম করেও হলেও ৭০ টাকা করে লাগছে। ইফতার, রাতের খাবার, সেহেরি দিয়ে একজন শিক্ষার্থীর সর্বনিম্ন খাবার খরচ হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা। অধিকাংশ শিক্ষার্থীই হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে।
মো. নাসিম নামে আরেক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লেখেন, রমজানের চাঁদ উঠার সঙ্গে সঙ্গে ক্যান্টিনের খাবার দাম ২০-৩০ টাকা করে বৃদ্ধি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে যে খাবারের দাম ৪০-৫০ টাকা টাকা ছিলো, রাতের ব্যবধানে ৭০ টাকা, পরিমান কিন্তু একই।
শোয়াইব হোসাইন নামে আরেক শিক্ষার্থী লেখেন, একই খাবার রাতে ৪০ টাকা কিন্তু সেহরির সময় ৭০-৮০ টাকা হয় কি করে? এদের বিরুদ্ধে কথা বলার কি কেউ নেই? সাধারণ ছাত্ররা কি ক্যান্টিন মালিকদের হাতে শুধুই জিম্মি! আশেপাশের অন্যান্য হলের তুলনায় আমাদের হলে খাবারের দাম ১০-২০ টাকা করে বেশি অথচ মানে সবচেয়ে খারাপ। এই অনিয়মের বিরুদ্ধে কেউ কি কথা বলবেন না?
তবে ক্যান্টিন মালিক মো. ফাহিম হোসেনের দাবি খাবারের মান অনেক ভালো ছিলো। তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বাজারে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি, তাছাড়া অন্যান্য হলের তুলনায় সূর্য সেনে খাবারের কোয়ালিটিও অনেক ভালো ছিল। তাছাড়া আমি মাছ-মাংসের সাইজ আনছি সেগুলোও অনেক বড় ছিল। তাই দামটি তুলনামূলক বেশি রাখা হয়েছে।
এদিকে মাস্টার দা’ সূর্য সেন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ মকবুল হোসেন ভুঁইয়া দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা নিয়মিত বিষয়টি মনিটরিং করি। তাছাড়া গতকাল রাতে কিছু ক্যান্টিন ও খাবারের দোকান ঘুরে তদারকি করাসহ নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। রমজানকে কেন্দ্র করে দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
দাম কমানোর ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে কি’না জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুই-একটা খাবারের আইটেম খাবারের দাম বৃদ্ধি করা হলে, তাদের কাছ থেকে বৃদ্ধির কারণ জানতে চাওয়া হবে। বিষয়টি আমরা দেখছি, খুব শিগগির তাদের সঙ্গে আমরা বসবো।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে হলের ক্যান্টিন ও দোকান পরিদর্শন করেন হলটির প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মকবুল হোসেন ভুঁইয়া। এসময় রমজানে হলে খাবারের মূল্য বৃদ্ধি না করে দামের সাথে মানের সামঞ্জস্য রাখার পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত খাবার ব্যবস্থা করার নির্দেশনাও দেন তিনি।