আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, খেলা হবে। অনেক খেলা। দেখা যাবে, কত ধানে কত চাল। অপেক্ষা করুন। ফখরুল সাহেব, রাস্তা দখল করবেন? রাজশাহীতে দেখলাম। এখন আবার ঢাকায়। সেই কবে ১০ তারিখ। আর সাতদিন আগেই নয়াপল্টন এলাকায় তাঁবু গাড়ছেন। হাড়ি-পাতিল, বিছানা, কম্বল নিয়ে আসছেন। কোথা থেকে পেলেন এই টাকা। অর্থ পাচার করে কারা?
শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আপনারা হয়তো গতকালও ঢাকার এক ক্যাডারে সঙ্গে তারেক রহমানের কথোপকথন শুনেছেন, সেখানে বলা হয়েছে, তোমরা রাস্তা ছাড়বে না। হাসিনা পালাবার পথ খুঁজছে। হাসিনার মন্ত্রীরা পালাবার পথ খুঁজছে।'
তিনি বলেন, এবার খেলা হবে হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে ,দুর্নীতির বিরুদ্ধে। লড়াই হবে লুটপাটের বিরুদ্ধে। খেলা হবে এই ডিসেম্বর মাসে। আন্দোলন হবে রাজপথ, জনপদ, শহর, জেলা, থানা ওয়ার্ড, পাড়া, মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সতর্কতার সঙ্গে অবস্থান নেবে। আক্রমণ হলে পাল্টা আক্রমণ হবে কি না সময় বলে দিবে। রাজপথ আমাদের। আমরা রাজপথ থেকে ক্ষমতায় এসেছি। আমরা আকাশ থেকে পড়িনি। আমরা মাটি খুঁড়ে উঠে এসেছি। আমরা জনগণের মাঝ থেকে এসেছি। কাজেই আমাদের ভয় দেখাবেন না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজশাহীতে বিএনপি বিভাগীয় সমাবেশ করছে। আর ময়মনসিংহে জনতার ঢল। মিছিলের পর মিছিল আসছেই। মহাসমাবেশ কাকে বলে চট্টগ্রামে বুঝিয়ে দেব। শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে ডাক দিয়ে যাবে। আমরা সজিব ওয়াজেদ জয়ের সহযোগীতায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছি। এবার প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন- আগামী নির্বাচনে আমাদের প্রধান শ্লোগান- এবার আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী পলাশীর মীরজাফরের জায়গায় খন্দকার মোশতাক। পলাশীর সেনাপতি এআর লতিফের জায়গায় সেনাপতি জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্টের মাস্টার মাইন্ড। তার পুত্র হাওয়া ভবনের যুবরাজ তারেক রহমান ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা, আইভি রহমানসহ ২৩ জনকে হত্যার নায়ক। তার নির্দেশে সেদিন মুফতি হান্নান বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। সেই হাওয়া ভবনের যুবরাজ যার নির্দেশে গ্রেনেড হামলা হয় সে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে মুচলেকা দিয়ে, আর রাজনীতি করবে না এ কথা বলে পাড়ি দিয়েছে বিদেশে। সেই থেকে তিনি পলাতক। আর বিদেশে বসে বসে সে এখন হুংকার ছাড়ে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কামাল সাহেব কেন আমাদেরকে শুধু অর্থ পাচারের কথা বলেন? তিনি তারেক রহমানের অর্থ পাচার ও দণ্ডিত হবার কথা কেন বলেন না? ইহুদি জামাতার মাধ্যমে অর্থ পাচার করেন কামাল হোসেন। বাংলাদেশের রাজনীতির রহস্য পুরুষ কামাল হোসেন। তারেক রহমানের অর্থ পাচার, সুইস ব্যাংকের টাকা কারা রেখেছে। অর্থ পাচার কারা করেছে তারা যে দলেরই হোক সবার অর্থের উৎস খোঁজা হচ্ছে। এদের শাস্তি পেতে হবে।
তিনি বলেন, কুমিল্লার সমাবেশের খবর পেয়েছেন, সেখানে ৭১টি মোবাইল চুরি হয়েছে। এর জন্য বিএনপির বিরুদ্ধে বিএনপির ৭১টি মামলা হয়েছে। এভাবেই তারা ভোট চুরি করে।
এর আগে ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ ময়দানে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকার সভাপতিত্বে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্তর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরিফ আহমেদ, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রেমন্ড আরেং, মারুফা আক্তার পপি প্রমুখ।