২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ মার্চের মধ্যে উত্তর কোরিয়ার শহর হায়েসান থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হয়। সেইসময়ে ৬৫৩টি বুলেট হারিয়ে যায়। উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের কানে কথাটি ওঠার পর তিনি গোটা হায়েসান শহরেই লকডাউন জারি করে দিলেন। রেডিও ফ্রি এশিয়ার সাথে কথা বলার সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই বাসিন্দা জানান, কিমের সেনা প্রায় ২ লক্ষ জনসংখ্যার হাইসান শহরে গোলাবারুদ খুঁজতে দ্বারে দ্বারে কড়া নেড়েছে ।উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ রায়ংগ্যাংয়ের একজন বাসিন্দা, যেখানে হাইসান অবস্থিত, নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরএফএ-এর কোরিয়ান সার্ভিসকে বলেছেন, ৬৫৩টি বুলেটের হদিশ না মেলা পর্যন্ত লকডাউন জারি থাকবে।
৭ মার্চ কেপিএ -এর সেভেন কর্পসের সৈন্যরা চীনের সীমান্তে অবস্থিত শহরটির আশেপাশের এলাকা প্রত্যাহার করার সময় অ্যাসল্ট রাইফেলের ৬৫৩টি বুলেট হারিয়ে ফেলে । এই সৈন্যরা ২০২০ সাল থেকে কোভিড ১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে সীমান্ত বন্ধ থাকার সময় এই অঞ্চলে অবস্থান করছিল। রায়ংগ্যাংয়ের বাসিন্দারা বলছেন, ২৫ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ মার্চের মধ্যে সৈন্যরা সরে গেছে ঠিকই , তবে সৈন্য প্রত্যাহার প্রক্রিয়া চলাকালীন বুলেটগুলি হারিয়ে যাওয়ার কারণে এখন পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চলছে।
সৈন্যরা বুলেটগুলি সম্পর্কে রিপোর্ট করার পরিবর্তে নিজেরাই খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। যদিও নিখোঁজ বুলেটগুলির সন্ধান এখনো মেলেনি । সূত্র অনুসারে, পুলিশ এবং সামরিক বাহিনী তদন্ত শুরু করেছে। পুরো শহরটি খালি করে প্রতিটি বাসায় তল্লাশি শুরু করেছে। বাসিন্দারা এই অঞ্চল থেকে সেনাবাহিনীর প্রস্থানের প্রত্যাশা করছিল, তবে তদন্ত তাদের চলাচলের স্বাধীনতাকে আরও সীমাবদ্ধ করবে বলে বাসিন্দারা শঙ্কিত।
রিয়াংগং প্রদেশের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরএফএকে বলেছেন যাতে তারা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারে। রায়ংগ্যাংয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরএফএকে বলেছেন, শহরের বাসিন্দারা স্বাধীনভাবে কথাও বলতে পারছেন না । কোরিয়ান দণ্ডবিধির ৭৮অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, লুণ্ঠন, অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং যুদ্ধের সরঞ্জামের অবৈধ দখলের ঘটনা ঘটলে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়, কোরিয়ান পিপলস আর্মির সামরিক নিরাপত্তা কমান্ড এবং সামাজিক নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় কঠোর সতর্কতা জারি করে।
ওই কর্মকর্তার মতে, স্থানীয়রা উদ্বিগ্ন যে, যদি কোনও সমাধান না হয় তবে কর্তৃপক্ষ নির্বিচারে এমন কাউকে শাস্তি দেবে যে সম্পূর্ণ নির্দোষ হতে পারে। কিছু বাসিন্দা দাবি করেছেন, দেশের শাসক ক্রমাগত উত্তর এবং দক্ষিণের মধ্যে একটি সহিংস সামরিক সংঘর্ষের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলছে, এমনকি দক্ষিণকে যুদ্ধের জন্য ক্রমাগত প্ররোচিত করছে । হায়েসান শহরের বাসিন্দারা এখন কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন এবং তদন্ত শেষ হবার অপেক্ষা করছেন।
সূত্র : ফার্স্টপোস্ট