যশোরের মণিরামপুরে শ্রেণিকক্ষে অজ্ঞাতরোগে আক্রান্ত হয়ে অর্ধশত শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ঘটনার পরে শিক্ষক-অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার সকালে মণিরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানা গেছে, ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুল প্রিয়া বিদ্যালয়ে সমাবেশের পর শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করছিলেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চুলকাতে শুরু করে। এক পর্যায়ে চুলকানোর জায়গায় লাল দাগ দেখা যায়। তার কাছে এসেই আক্রান্ত হন জিম নামের আরেক সহপাঠী। একে একে বিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী আক্রান্ত হয়। সে সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দুইজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
কিছুক্ষণের মধ্যে ওই বিদ্যালয়ের একই উপসর্গ নিয়ে প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নেয়া হয়। এ ঘটনায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম অবস্থার সৃষ্টি হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌতম হালদার জানান, সকালে সমাবেশ শেষে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চলাকালে জান্নাতুল প্রিয়া নামের ৪র্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী প্রথমে আক্রান্ত হয়।
পরপরই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হলে প্রথম ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের আলাদা করা হয়।
অভিভাবক দেবাশীষ দেবনাথ বলেন, তার ছেলে দিপ্র সুস্থ শরীরে বিদ্যালয়ে যাবার পর এই রোগে আক্রান্ত হয়। তিনি আক্রান্ত হওয়ার কারণ খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছেন।
মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তন্ময় বিশ্বাস জানান, প্রথমিকভাবে গণমনোস্তাত্ত্বিক রোগে আক্রান্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. জেসমিন সুমাইয়া জানান, প্রত্যেক শিক্ষার্থীই একই উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন তবে, এটি অ্যানাফিল্যাকটিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে অভিহিত করা যায়।
এদিকে, খবর পেয়ে ওই বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না। এ সময় তিনি বিদ্যালয়ের মাঠে গরুবাহি বিপুল সংখ্যক নছিমন, আলমসাধুসহ নানা ধরনের যানবাহন দেখতে পান। শিক্ষার্থীরা ওই যানবাহনে উঠে খেলাধুলা করেন। তিনি প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন রোগাগ্রস্থ কোনো পশুবাহী যানবাহনের সংস্পর্শ থেকে এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু মোত্তালেব আলম বলেন, এ ঘটনায় হাসপাতালের আরএমও হুমায়ুন কবিরকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।