দৈনিক শিক্ষাডটকম, পাবনা: ঈশ্বরদী ও আশেপাশের এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া চলমান তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে বেঁকে যাচ্ছে রেলের পাত। ট্রেনের গতি কমানোর পাশাপাশি সতর্ক না থাকলে যে কোনো মুহূর্তে ট্রেন দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। রেললাইনের লোহার রেলপাত মূলত ৫০ ডিগ্রি পর্যন্ত সহনীয়। কিন্তু চলমান অতি তীব্র তাপপ্রবাহে লোহার পাতের তাপমাত্রা ৫৭ ডিগ্রি ছড়িয়ে যাওয়ার কারণে লাইন বেঁকে যাচ্ছে।
এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রেলের পাকশী বিভাগের আব্দুলপুর স্টেশনে এবং গতকাল শুক্রবার ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনের কাছে রেললাইন বেঁকে যায়। শুক্রবার রাজশাহীগামী আন্তঃনগর কপোতাক্ষ ট্রেনটিকে প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রাখার পর অন্য লাইন দিয়ে ঘুরিয়ে থ্রো-পাস করা হয়।
পরে রেলের কর্মচারীরা প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে লাইনের ওপর পানি ঢেলে তাপ কমিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। এরপর পুনরায় পর ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে কর্মরত স্থানীয় শ্রমিক শুভ হোসেন জানান, ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে কপোতাক্ষ ট্রেন ছাড়ার পর বাইপাস স্টেশনের কাছে আসার আগেই দূর থেকে রেললাইন বাঁকা মনে করেন স্টেশন মাস্টার তাওলাদ হোসেন। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে কর্মকর্তাদের জানান। পরে বিভাগীয় রেলের পরিবহন কর্মকর্তা ও সহকারী প্রকৌশলীসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ট্রেনটি অন্য লাইন দিয়ে থ্রো-পাসের ব্যবস্থা করেন।
বাইপাস স্টেশনের মাস্টার তাওলাদ হোসেন জানান, তীব্র রোদে রেললাইন প্রায় ২৫ ফুট বেঁকে গেছে। পরে রেলওয়ের লোকজন লাইনের ওপর পানি ঢেলে তাপমাত্রা কমিয়ে আনার পর রেলপথ স্বাভাবিক হয়।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন বলেন, তীব্র ও অতি তীব্র তাপমাত্রায় গত বৃহস্পতিবার আব্দুলপুর স্টেশনে এবং শুক্রবার ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনের কাছে রেললাইন বেঁকে যায়। এ জন্য সাময়িক অসুবিধা হয়েছে। পরে প্রকৌশলীদের সহায়তায় লাইনে পানি ঢেলে বিষয়টির সমাধান করা হয়েছে।
পাকশী বিভাগের প্রকৌশলী-২ বীরবল মন্ডল বলেন, চলমান তীব্র ও অতি তীব্র তাপপ্রবাহে কিছু কিছু স্থানে রেললাইন বেঁকে যাচ্ছে। পরিবেশগত তাপমাত্রার চেয়ে রেললাইনের লোহার তাপমাত্রা ১৫-২০ ডিগ্রি বেড়ে যায়। রেললাইনের লোহার রেলপাত ৫০ ডিগ্রি পর্যন্ত সহনীয়। কিন্তু চলমান অতি তীব্র তাপপ্রবাহে লোহার রেলপাতের তাপমাত্রা ৫৭ ডিগ্রি ছড়িয়ে যাওয়ার কারণে লাইন বেঁকে যাচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পানি ঢালার পর বাঁক স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে আসছে। কিন্তু বেশি পরিমাণ বেঁকে গেলে বাঁকা অংশ কেটে বাদ দিয়ে নতুন করে জোড়া দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সতর্কতার সাথে এবং দিনের বেলায় প্রখর রোদে গতি কমিয়ে ট্রেন চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।