ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে মানবিক কারণে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব পাস হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ওই প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হলে তা পাস হয়। খবর আলজাজিরার।
ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধ তিন সপ্তাহে গড়ালেও তা বন্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে না পারায় এবার সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব পাস হলো। মূলত রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা ও ভেটোর কারণে এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদে কোনো প্রস্তাব পাস হয়নি।
২২টি আরব দেশের পক্ষে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এই প্রস্তাব উত্থাপন করে জর্ডান। এরপর ১৯৩ সদস্যবিশিষ্ট বিশ্বসংস্থার ১২০ দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। ১৪টি দেশ বিপক্ষে ভোট দেয় এবং ৪৫টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। ইসরায়েল ও তাদের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে।
ভোটাভুটির আগে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেছেন, এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার মানে হলো অনর্থক যুদ্ধ এবং অনর্থক হত্যাকাণ্ডকে অনুমোদন করা।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে কোনো প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর তা মেনে চলার কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। তবে কোনো বিষয়ে বিশ্ব জনমত কোন দিকে তার দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করে এটি। একই সঙ্গে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ এই পরিষদের সদস্য হওয়ায় গৃহীত প্রস্তাবের নৈতিক গুরুত্ব আছে।
গৃহীত প্রস্তাবে মানবিক কারণে অবিলম্বে ও টেকসই যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের জোরপূর্বক স্থানান্তরের যে কোনো ধরনের প্রচেষ্টাকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
এতে যুদ্ধের মাত্রা যেন আর না বাড়ে তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গাজায় মানবিক ত্রাণসহায়তা বৃদ্ধির দাবি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৩ লাখের মানুষের
গাজায় খুবই নগণ্য ত্রাণসহায়তা প্রবেশ করেছে। যদিও ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলা ও টানা অবরোধের কারণে গাজায় খাবার, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় চরম মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।সাধারণ পরিষদের গৃহীত প্রস্তাবে জিম্মিকৃত সব বেসামরিক নাগরিককে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ ও নির্বিচারে হামলার নিন্দা করা হয়েছে।