নীলফামারীর ডোমারে গোপনে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার অভিযোগে স্থানীয় ও চাকরি আবেদনপ্রার্থীরা প্রধান শিক্ষক দিনেশ চন্দ্র রায়কে বিদ্যালয়ের কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে। এর আগেও গোপনে অন্য আরেকটি নিয়োগ পরীক্ষা নিতে গিয়েও স্থানীয়দের হাতে লাঞ্ছিত হয়ে পরীক্ষা স্থগিত করেছিলেন তিনি। এ সময় পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নিয়োগ বোর্ড এর প্রতিনিধি, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দ্রুত পরীক্ষাস্থল ত্যাগ করেন। পরে নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধের নোটিশ দিয়ে ছাড়া পায় ওই প্রধান শিক্ষক।
অবরুদ্ধ প্রধান শিক্ষকের নাম দিনেশ চন্দ্র রায়। তিনি উপজেলার বড় রাউতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আছেন। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে আলমগীর
গত সোমবার বিকালে ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড় রাউতা উচ্চ বিদ্যালয়ে। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোজাম্মেল হক বলেন, বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক, নিরাপত্তাকর্মী ও অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যা আমরা জানি না।
বিদ্যালয়ের সভাপতি আলহাজ মনছুরুল ইসলাম দানু, প্রধান শিক্ষক দিনেশ চন্দ্র রায় ও অভিভাবক সদস্য নাসির বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের না জানিয়ে গোপনে মিটিং করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়ে ও নিয়োগ কমিটি তৈরি করে।
কোনো মিটিং কিংবা রেজ্যুলেশন করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন গোপনে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেন করে পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়ার পাঁয়তারা করছে। ম্যানেজিং কমিটির আরেক সদস্য মো. জাকারিয়া বলেন, ইতিপূর্বেও অনিয়মের কারণে নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ হয়েছিল। সে সময় ওই বিদ্যালয়ের জমিদাতা সদস্য ও চাকরিপ্রার্থী জাহিদুল ইসলাম ইউএনও, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। কোনো কিছু তোয়াক্কা না করে আবারো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছেড়ে গোপনে পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করে। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি বুঝতে পারলে স্কুলে এসে এর কারণ জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে একটি নোটিশ প্রদান করেন।
চাকরি পরীক্ষার্থী শাকিল ইসলাম জানান, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে আমি নৈশ্যপ্রহরী পদে আবেদন করি।
পরে জানতে পারি সেই পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। আমি প্রধান শিক্ষক দিনেশ চন্দ্র রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরে পরীক্ষা নেয়া হবে। কিন্তু এখন জানতে পারলাম নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হবে। কিন্তু এবারের বিজ্ঞপ্তির কথা জানতেই পারিনি।
প্রধান শিক্ষক দিনেশ চন্দ্র রায় মুঠোফোনে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তুতিকালে জাহিদুল ইসলাম ও তার দুই ছেলের হট্টগোলের কারণে পরীক্ষা নেয়ার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার, পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির দুই সদস্যের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিদ্যালয়ের সভাপতির বাসায় তাদের নিয়ে নিয়োগ বিষয়ে কথা হয়েছে। তারা বিষয়টি অবগত আছেন।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাকেরিনা বেগম বলেন, গত বিজ্ঞপ্তির একটি পদ স্থগিত রেখে নতুন করে নিয়োগ দেয়ার সময় পূর্বের আবেদনকারী পরীক্ষার্থীরা জানতে পেরে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে হট্টগোল শুরু করে। পরে পরীক্ষা নেয়ার সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।