এসএসসির খাতা মূল্যায়নে যশোর শিক্ষা বোর্ডে দায়সারাভাবে পরীক্ষক-প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্ব বণ্টনের অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষকদের আবেদন যাচাই-বাছাই না করেই তাদের পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ফলে, এক গ্রন্থাগার শিক্ষক এসএসসির অর্থনীতি বিষয়ের খাতা মূল্যায়নে প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছেন।
অর্থনীতি বিষয়ে প্রধান পরীক্ষক হওয়া গ্রন্থাগার শিক্ষকের নাম মো. কামরুজ্জামান। তিনি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হিজলদি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি অর্থনীতি বিষয়ের শিক্ষক না হলেও তাকে ওই বিষয়ের প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্ব দিয়েছে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, যে শিক্ষক যে বিষয়ে পড়ান ওই বিষয়ের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পরীক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হন। কয়েকবার পরীক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর দক্ষতার ভিত্তিতে তাকে প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়। প্রধান পরীক্ষক খাতা সার্বিক মূল্যায়নের পর তা আবার নিরীক্ষকের মাধ্যমে নিরীক্ষা করা হয়। তারপর সেই নম্বর বোর্ডে জমা দেয়া হয় এবং বোর্ড তা শিক্ষার্থীর নাম-রোল অনুসারে সংযুক্ত করে। সব বিষয়ের নম্বর উঠিয়ে ফল প্রস্তুত হয়। সে হিসেবে পরীক্ষক, প্রধান পরীক্ষক, নিরীক্ষক কোনো একটি স্তরে সামান্য ভুল করলে পুরো ফল বদলে যেতে পারে।
গ্রন্থাগার শিক্ষক অর্থনীতির প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ায় এসএসসির পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষক নিয়োগের মতো এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়নি বলে মনে করেছেন স্থানীয় শিক্ষকরা।
গ্রন্থাগার শিক্ষক কামরুজ্জামানের কাছে অর্থনীতি বিষয়ের প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি গত ১০ বছর ধরে খাতা দেখছি। বোর্ডের সবাই আমার কাছের মানুষ। এটা কোনো ব্যাপার না।
হিজলদী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, গ্রন্থাগার শিক্ষক হয়েও কিভাবে অর্থনীতি বিষয়ের প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছেন তা আমার জানা নেই। তবে কম্পিউটার সম্পর্কে আমার ধারণা কম থাকায় ওটিপি যে যার মতো করে বোর্ডে পাঠিয়েছে।
বোর্ডের একটি সূত্র বলছে, কর্মকর্তাদের উদাসীনতার সুযোগে কয়েকজন কর্মচারীর যোগসাজসে এমন ঘটনা ঘটছে। এ সব কারণে অনেক যোগ্য ও মেধাবী শিক্ষক খাতা মূল্যায়নে অনাগ্রহী হয়ে পড়ছেন।
জানতে চাইলে যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বিশ্বাস শাহীন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, গ্রন্থাগার শিক্ষক অর্থনীতি বিষয়ের প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্ব পেয়ে থাকলে আমার কাছে তথ্য পাঠান। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।